প্রহৃত: শ্যামাপদ মণ্ডলকে মাটিতে ফেলে মার। —নিজস্ব চিত্র।
জেলার বিভিন্ন জায়গায় মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন দলের নেতা-কর্মীরা। এই অভিযোগ তুলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করতে বাঁকুড়ার জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন বিজেপির রাজ্য নেতারা। শুক্রবার দুপুর ১২টা নাগাদ ডিএম অফিসের সামনেই তাঁদের উপরে চড়াও হল দুষ্কৃতীরা।
বাঁকুড়ার জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘‘বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব দেখা করতে চেয়ে ফোন করেছিলেন। ওঁদের আসতে বলেছিলাম। পুলিশ সুপারকেও আগাম জানিয়ে রেখেছিলাম। তার পরেও ওঁরা কী ভাবে আক্রান্ত হলেন, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ জেলা পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরার বক্তব্য, ‘‘মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়নপর্ব চলছিল। পুলিশকর্মীরা সেখানে ভিড় সামলাচ্ছিলেন। তবে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ পৌঁছয়।’’
বাঁকুড়ার জেলাশাসকের দফতরের কাছেই মহকুমাশাসকের (বাঁকুড়া সদর) অফিস। এ দিন তার বাইরে ছিল জটলা। মনোনয়ন জমা দিতে গেলে এ দিনও তাঁদের মারধর করা হয় বলে দাবি বিরোধীদের। এ সবের মধ্যেই বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, সঞ্জয় সিংহ, রাজ্য সম্পাদক শ্যামাপদ মণ্ডল এবং জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র গাড়ি নিয়ে জেলাশাসকের দফতরে ঢুকছিলেন। ভূমি অধিগ্রহণ দফতরের বাইরে তাঁদের গাড়ি ঘিরে ধরে এক দল লোক। অধিকাংশের মাথায় ছিল হেলমেট। মুখে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান। ইট দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয় গাড়ির পিছনের কাচ। গাড়ি থেকে টেনে বের করে শ্যামাপদবাবুকে মারধর করা হয়। কোনও রকমে এলাকা ছাড়েন বিজেপি নেতারা।
আরও পড়ুন: তিন জেলায় তিন পদস্থ পুলিশকর্তা
কিছু ক্ষণের মধ্যেই জেলাশাসকের দফতরের সামনে আসেন এসপি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে ফিরে যান তিনি। বিবেকানন্দবাবুর দাবি, ফিরে আসার পরে জেলাশাসক ফোন করে বলেন, নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে আসা হবে। তাঁরা যেন দেখা করেন। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘কোন ভরসায় যেতাম? পুলিশ-প্রশাসনের উপরে আর আস্থা নেই।’’ দুর্গাপুরে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘ডিএম অফিসে আগাম সময় নিয়ে দেখা করতে গিয়েও আক্রান্ত হলেন নেতারা! আগে থেকেই দুষ্কৃতীরা বসেছিল।’’
জেলা সভাধিপতি, তৃণমূলের অরূপ চক্রবর্তীর অবশ্য দাবি, ‘‘এটা বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের জড়ানোর চেষ্টা চলছে।’’ বিবেকানন্দবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূলের গুন্ডারা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়েছে, যাতে দোষ আমাদের ঘা়ড়ে পড়ে।’’