ছবি: সংগৃহীত।
কোনও দেশই তাঁদের আর অবহেলা করতে পারছে না। স্বাভাবিক ভাবে কোনও রাজনৈতিক শিবিরের কাছেই তৃতীয় লিঙ্গভুক্তদের অধিকারের বিষয়টি এখন উপেক্ষা করার মতো নয়। রূপান্তরকামীদের নিজস্ব পরিচয়ের অধিকার, ঘর থেকে বিচ্ছিন্ন ট্রান্সশ্রেণির ব্যক্তিদের জন্য হোমের বন্দোবস্ত করার মতো উদ্যোগে শামিল হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বসে নেই রাজ্য সরকারও। বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে বহু প্রতীক্ষিত ট্রান্সজেন্ডার উন্নয়ন বোর্ড ফিরিয়ে আনল তারা।
২০১৪ সালের নালসা রায়ে তৃতীয় লিঙ্গভুক্তদের সমান নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার পর থেকে ওই শ্রেণির মানুষদের রাজনৈতিক ও সামাজিক স্বীকৃতি বেড়েছে। ভোট-রাজনীতির তাগিদে তাঁদের থেকে দূরে সরে থাকতে পারছেন না কোনও দলই। রূপান্তরকামী-সহ তৃতীয় লিঙ্গের লোকজন সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে কতটা বঞ্চিত, বীরভূমের মতো জেলায় ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে নেমে সেটা চাক্ষুষ করেছে রাজ্যের শাসক শিবির। ওই কর্মসূচিতে রূপান্তরকামীদের কাছে খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথীর মতো প্রকল্পের সুফল ও সুরক্ষা পৌঁছে দিতে তৎপর হয়েছে তৃণমূল সরকার। এ বার নতুন ট্রান্সজেন্ডার বোর্ড চালু হল তিন বছর পরে। নতুন বোর্ডের মেয়াদ তিন বছর। ‘‘জানুয়ারিতেই বোর্ডের মিটিং,’’ মঙ্গলবার বলেন বোর্ডের চেয়ারপার্সন ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা।
রূপান্তরিত নারী, প্রাক্তন কলেজ অধ্যক্ষা মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও নতুন বোর্ডে রয়েছেন রূপান্তরকামী নারী, পুরুষ, হিজড়ে শ্রেণির ঘনিষ্ঠেরা। তবে দীর্ঘদিনের সমাজকর্মী ও রূপান্তরকামী নারী রঞ্জিতা সিংহ এ বারের বোর্ডে নেই। তিনি বলেন, ‘‘আশা করব, রূপান্তরকামীদের নাগরিক অধিকার, শিক্ষা, জীবিকার ক্ষেত্রে দিশা দেখাবে বোর্ড।’’ ওই বোর্ডের নতুন সদস্য তৃতীয় লিঙ্গ সত্তা নিয়ে গবেষণারত, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা লোপামুদ্রা সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘সমাজে রূপান্তরকামীদের প্রতি বিদ্বেষ দূর করা, সচেতনতা বাড়ানো, বঞ্চিত এই শ্রেণিটির জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের অবকাশ রয়েছে।’’