প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ফাইল চিত্র।
ভবানীপুরে বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী দিতে চায় প্রদেশ কংগ্রেস। দলের রাজ্য নেতৃত্বের এই মত ও যুক্তির কথা সোমবার এআইসিসি-কে জানিয়ে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভবানীপুরে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী দেওয়া হবে কি না, সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডই। মুর্শিদাবাদ জেলার দুই কেন্দ্র শমসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে কংগ্রেস সমর্থন করবে বাম প্রার্থীদের। জাতীয় স্তরে কংগ্রেস-তৃণমূল বোঝাপড়ার আবহের মধ্যেই ভবানীপুরে মমতার বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রার্থী দিতে চাওয়া তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বলেই রাজনৈতিক শিবিরের অভিমত।
বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পরে যিনি ফের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, সেই মমতার বিরুদ্ধে উপনির্বাচনে প্রার্থী তাঁরা দিতে চান না— মাসদুয়েক আগে এই মত দিয়েছিলেন অধীরবাবু। তবে একই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, এটা তাঁর ‘ব্যক্তিগত মত’। ভবানীপুরে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরে সোমবার বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন অধীরবাবু। বৈঠকে উপস্থিত ৮ জনের মধ্যে ৬ জন নেতাই বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি মাথায় রেখে ভবানীপুরে হাত চিহ্নের প্রার্থী রাখার পক্ষে সওয়াল করেন। প্রদেশ নেতৃত্বের মতামতের কথা এ দিনই এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপালকে চিঠি লিখে জানিয়ে দিয়েছেন অধীরবাবু। বাংলার কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে এআইসিসি সায় দেয় কি না, সে দিকেই এখন নজর রাজনৈতিক শিবিরের। এআইসিসি সবুজ সঙ্কেত দিলে প্রার্থী হওয়ার জন্য পাল্লা ভারী দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ প্রসাদের।
অধীরবাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘ভবানীপুরের ব্যাপারে আমাদের দলের নেতারা যা বলেছেন, তার নির্যাস দিল্লিকে জানাচ্ছি। এআইসিসি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’’ তিনি যে আগে প্রার্থী না দেওয়ার কথা বলেছিলেন, সেই প্রসঙ্গে প্রদেশ সভাপতির বক্তব্য, ‘‘বারবার বলেছি, সেটা ছিল আমার ব্যক্তিগত মত। তবে কয়েক মাস কেটেছে। পরিস্থিতির বদল ঘটেছে। তা ছাড়া, সৌজন্যও এক তরফা হয় না।’’ প্রকাশ্যে ব্যাখ্যায় না গেলেও ‘সৌজন্য’ বলতে অধীরবাবু মুর্শিদাবাদের রানিনগরের ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন। সেখানে কংগ্রেস কর্মীদের বাড়িতে শাসক দলের হামলার অভিযোগ পেয়ে সাংসদ অধীরবাবু যাওয়ার পরে তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ, ধাক্কাধাক্কি হয়। প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠকে এ দিন একাধিক নেতা ওই ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, বিজেপি-বিরোধী রাজনীতিতে জাতীয় স্তরে কংগ্রেস-তৃণমূল সমন্বয় করে চললেও রাজ্যে কংগ্রেসের উপরে হামলা বন্ধ হয়নি। রানিনগরের ঘটনার নিন্দা তৃণমূল নেতৃত্ব করেননি। বিরোধী নেতা-কর্মীদের ‘মিথ্যা মামলা’য় ফাঁসানোও চলছে। এমতাবস্থায় তৃণমূল ও বিজেপিকে ময়দান ছেড়ে না দিয়ে বরং হাত চিহ্ন জনদরবারে থাকুক। কংগ্রেসের এই মতকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিএম।