দেবদত্তার নামের প্লেট বাংলোর বাইরে। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসক, পুলিশের সঙ্গে কোভিড যুদ্ধের সেনানী তাঁরাও। মৃত্যুও হয়েছে এক যোদ্ধার। তিনি দেবদত্তা রায়। আর তাঁর নামে নিজের বাংলোর নাম রাখলেন আর এক যোদ্ধা সৈয়দ মাসুদুর রহমান। তিনি মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের-১ ব্লকের বিডিও।
সপ্তাহ দুয়েক আগে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বছর আটত্রিশের দেবদত্তার। হুগলির চন্দননগরে কর্মরত ছিলেন তিনি। লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পৌঁছনোর দায়িত্ব সামলেছিলেন ২০১১ সালের ডব্লিউবিসিএস আধিকারিক দেবদত্তা। একই ব্যাচ ছিল বছর সাঁইত্রিশের মাসুদুরেরও। দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ পর্বে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে বিভিন্ন ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকের মধ্যে। যা বলছিলেন রঘুনাথগঞ্জ -১'র বিডিও। তাঁর কথায়, ‘‘প্রত্যেক ব্যাচেই অনেক দিনের প্রশিক্ষণ হয়। বন্ধুত্ব তৈরি হয়। যা সময়ের সঙ্গে স্মৃতিতে পরিণত হয়।’’
একই ব্যাচ হওয়ার কারণেই কি দেবদত্তার নামে বাংলোর নামকরণ করেছেন মাসুদুর! মাসুদুরের কথায়, ‘‘কোভিড লড়াইয়ের সৈনিক দেবদত্তা। এই লড়াইয়ে ও আমাদের অনুপ্রেরণা।’’ কিন্তু বাংলো তো সরকারি! এক দিন অন্যত্র বদলি হতে হবে বেহালার যুবককে। তখন তো দেবদত্তার নাম সেখান থেকে মুছে যেতে পারে। মাসুদুরের বক্তব্য, "এখানে নতুন যিনি আসবেন, তিনি বাংলোর নামকরণ নিয়ে প্রশ্ন করবেন। আর তখনই দেবদত্তার কথা আসবে, তার লড়াই আসবে। কাজের মধ্যেই বেঁচে থাকবে দেবদত্তা।"
চন্দননগরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের মৃত্যুর পরের দিন রঘুনাথগঞ্জ-১ ব্লকে স্মরণসভা হয়। সেখানে বাংলোর নামকরণ দেবদত্তার নামে করা নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিডিও মাসুদুর। আপত্তি করেননি কেউ। দিন চারেক আগে বাংলোর গায়ে দেবদত্তার নামের প্লেটটি বসে।