গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কমব্যাট ফোর্সের বাণেশ্বর সিংহকে। —নিজস্ব চিত্র।
রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী। স্থানীয় একটি মেলাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়েছে বলে অভিযোগ। গুলিতে একটি শিশু-সহ মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২ জনের। এক পুলিশ কর্মী-সহ অন্তত ৭ জন জন গুলিবিদ্ধ।
বাসন্তীর চড়াবিদ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের হেতালখালিতে সংঘর্ষটি হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, হেতালখালির একটি মেলার নিয়ন্ত্রণ হাতে নেওয়াকে কেন্দ্র করেই গোলমাল শুরু হয় বৃহস্পতিবার দুপুরে। যথেচ্ছ গুলিবৃষ্টি এবং বোমাবাজি শুরু হয়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বাসন্তী থানার পুলিশ। পাঠানো হয় কমব্যাট ফোর্সও।
গোলমাল এতটাই বড় আকার নিয়েছিল যে, পুলিশও সহজে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। পুলিশের উপরেও হামলা হয়। তাতে বাণেশ্বর সিংহ নামে কমব্যাট ফোর্সের এক সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। দু’পক্ষের প্রবল সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মৃত্যু হয় রিয়াজুল মোল্লা নামে ৯ বছরের এক স্কুল পড়ুয়ার। হাসান লস্কর নামে এক তৃণমূল কর্মীরও মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও ৬ জন।
কমব্যাট ফোর্সের বাণেশ্বর সিংহকে প্রথমে ক্যানিং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুলপিতেও বন্দর চান আদানিরা
সংঘর্ষে যে ৬ তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তাঁদেরও প্রথমে ক্যানিং হাসপাতালেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে কলকাতার চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
বাসন্তী ব্লকের চড়াবিদ্যা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা আগেও বহু বার রাজনৈতিক সংঘর্ষের কারণে শিরোনামে এসেছে। বাম আমলে সরকারের দুই শরিক সিপিএম এবং আরএসপি-র মধ্যে সংঘর্ষে বহু বার উত্তপ্ত হয়েছে চড়াবিদ্যা। রাজ্যের ক্ষমতার অলিন্দে পরিবর্তন আসার পর সিপিএম-আরএসপি সাংগঠনিক ভাবে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে ওই এলাকায়। কিন্তু বামেদের শরিকি সঙ্ঘাতের জায়গা নিয়েছে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল।
আরও পড়ুন: বাবা-ছেলেকে দেড় বছর পর মেলাল এক্সপায়ার্ড চকোলেট
তৃণমূল নেতা মন্টু গাজি এবং তৃণমূল যুব কংগ্রেসের নেতা আমান লস্করের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরেই রেশারেশি চলছিল বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, উত্তাপ ততই বাড়ছে। হেতালখালির মেলাকে কেন্দ্র করে আসলে এলাকা দখলের লড়াইতেই জড়িয়ে পড়েছে দুই নেতার গোষ্ঠী, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের এমনটাই দাবি।