বন্ধ পড়ে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির হিমঘর। —নিজস্ব চিত্র।
তৈরি হওয়ার পর পেরিয়ে গিয়েছে বছর খানেক। কিন্তু এখনও খোলেনি হিমঘরের তালা। কিন্তু সেই বন্ধ হিমঘরের জন্যই প্রতি মাসে গুনতে হচ্ছে বিদ্যুতের বিল। কালনা নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটির সব্জি হিমঘরে বেশ কয়েক মাস ধরেই চলছে এই সমস্যা।
নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই হিমঘরে আলো, পাখা, এসি মেশিন-সহ নানা সরঞ্জাম থাকলেও হিমঘর ব্যবহার না হওয়ায় কোনটাই চালু অবস্থায় নেই। কিন্তু তারপরেও কেন আসছে বিদ্যুৎ বিল? বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বড় শিল্পের কারণে যেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়, সেখানে বিদ্যুতের কোনও খরচ না হলেও প্রতি মাসে ২৫ থেকে ২৮ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। এ ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। বাজার সমিতির এক কর্তা জানান, ওই হিমঘরে বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় ২৬ হাজার টাকার বিল আসে। আপাতত, নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির পক্ষ থেকেই সেই বিল মেটানো হচ্ছে। কালনা নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটির সম্পাদক সুজয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে পরবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ বিলের টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টিই জানানো হয়েছে রাজ্য বিপনন পর্ষদে। আপাতত আমরা পরবর্তী নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু বর্ধমানই নয়, বহু বছর ধরেই নদিয়া, হুগলি জেলার বেশ কিছু এলাকার চাষিরা ট্রাক, গোরুর গাড়ি, ট্র্যাক্টরে করে কালনা নিয়ন্ত্রিত বাজারে ফসল বিক্রি করতে আসেন। চাষিদের অভিযোগ, কালনা নিয়ন্ত্রিত বাজারে ফসল সংরক্ষণের জায়গা না থাকায় সব্জির ভাল দাম পাওয়া যায় না। তাই কালনা নিয়ন্ত্রিত বাজারে ফসল সংরক্ষণের জন্য ২০১০ সালে রাজ্য বিপনন পর্ষদ নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি চত্বরের মধ্যে সব্জি হিমঘর তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। ঠিক হয়, প্রকল্পটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৯৭ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫৭৮ টাকা খরচ করে শেষ হয় প্রকল্পটির কাজ। হিমঘরের বিদ্যুদায়নের জন্য বসানো হয় আলাদা একটি ট্রান্সফর্মার। ২০১৩ সালে উদ্বোধন হয় হিমঘরটির। কিন্তু হিমঘরগুলি কী ভাবে চলবে সেই বিষয়ে কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা না থাকায় এখনও কোনও হিমঘরই চালু হয়নি।
নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির চেয়ারম্যান ও কালনার মহকুমা শাসক সব্যসাচী ঘোষ বলেন, “আমি সবে এসেছি। সব্জি হিমঘরটির কী সমস্যা রয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখব।”