বন্ধ দোকানের সামনে ফুল মহম্মদ। —নিজস্ব চিত্র।
তাঁর ভুল অভিযোগের জন্য অসম্মানিত হয়েছেন এলাকার তিন যুবকএই অভিযোগে সালিশি সভায় ডাকা হয়েছিল এক মুদির দোকানদারকে। সেখানে না যাওয়ায় তৃণমূলের কিছু কর্মী মঙ্গলবার সকালে তাঁর দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বলে পুলিশে অভিযোগ করলেন দুর্গাপুরের ওই প্রৌঢ়।
মঙ্গলবার বিকেলে শেখ ফুল মহম্মদ নামে ওই দোকানদার নিউ টাউনশিপ থানায় জনা দশেকের নামে অভিযোগ করেন। তালা ঝোলানোর আগে তৃণমূলের কর্মীরা দোকানের বেশ কিছু জিনিসপত্রও সরিয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। পুলিশে কাছে তাঁর আর্জি, অবিলম্বে দোকান খোলার ব্যবস্থা না করলে পরিবার নিয়ে তিনি বিপাকে পড়বেন। পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শহরের হরিবাজার এলাকার বাসিন্দা ফুল মহম্মদ জানান, ঘটনার সূত্রপাত গত ১৬ জুন। এক গ্রামবাসীর কাছ থেকে সে দিন দশ হাজার টাকা পান তিনি। সেটি ক্যাশবাক্সের বদলে ভুল করে অন্য কোথাও রাখেন। সেই সময়ে গ্রামের এক যুবক দোকানে জিনিস কিনতে এসেছিলেন। পরে ক্যাশবাক্সে টাকা না পেয়ে ওই যুবকের উপরে সন্দেহ গিয়ে পড়ে তাঁর। ফুল মহম্মদ বলেন, “আমি ওই যুবকের বাড়িতে গিয়ে তাঁর দেখা পাইনি। ফেরার পথে এলাকার পাঁচ তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে দেখা হলে ঘটনার কথা জানাই।” তিনি অভিযোগ করেন, তৃণমূল কর্মীরা ওই যুবক ও তাঁর আরও দুই সঙ্গীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁরা টাকা চুরির কথা অস্বীকার করেন। তখন তাঁদের মারধর করে এক মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে মুচলেকা লেখানো হয়। ফুল মহম্মদ জানান, এর দিন দুয়েক পরে টাকা খুঁজে পাওয়ায় ওই তৃণমূল কর্মীদের কাছে গিয়ে তিনি ভুল স্বীকার করেন। তাঁর অভিযোগ, “এর পরেই ক্ষেপে ওঠে ওরা। মাঝে এ নিয়ে কিছু না বললেও রবিবার একটি সালিশি সভায় ডাকে। জরিমানা-মারধরের ভয়ে আমি যাইনি।”
তৃণমূল নেতা-কর্মীরা অবশ্য ওই যুবকদের মারধর বা মুচলেকার কথা মানেননি। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দীপঙ্কর লাহার দাবি, “দোকানদারের ভুল অভিযোগে তিন জন অপমানিত হওয়ায় গ্রামে অশান্তির আবহ তৈরি হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে গ্রামবাসীদের ডাকা সভায় গিয়েছিলাম আমি। ফুল মহম্মদও এসেছিলেন। তিনি ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০ হাজার টাকা দিতে সম্মত হন। পরে বেঁকে বসেছেন।” তবে তালা ঝোলানোর সঙ্গে তাঁদের দলের কেউ যুক্ত নয় বলে দাবি করেন কাউন্সিলর। তাঁর দাবি, “ক্ষুব্ধ কয়েক জন গ্রামবাসী এই কাজ করেছেন।”