সিপিএম নেতার ইটভাটায় ভাঙচুর, অভিযুক্ত তৃণমূল

সিপিএম নেতার ইটভাটায় ঢুকে বাস, ট্রাক্টর ও মোটরবাইক ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই নেতার অভিযোগ, প্রায় দেড়শো জন তৃণমূলের দুষ্কৃতী ইটভাটায় ঢুকে ভাঙচুর ও লুঠপাট চালিয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ রায়না থানায় অভিযোগও করেছেন তিনি। তবে তৃণমূলের নেতারা ঘটনার কথা স্বীকার করে নিলেও ওই ঘটনায় দলের কেউ জড়িত নয় বলে জানিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়না শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৫ ০১:০৬
Share:

ইটভাটায় পড়ে ভাঙা বাস।—নিজস্ব চিত্র।

সিপিএম নেতার ইটভাটায় ঢুকে বাস, ট্রাক্টর ও মোটরবাইক ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই নেতার অভিযোগ, প্রায় দেড়শো জন তৃণমূলের দুষ্কৃতী ইটভাটায় ঢুকে ভাঙচুর ও লুঠপাট চালিয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ রায়না থানায় অভিযোগও করেছেন তিনি। তবে তৃণমূলের নেতারা ঘটনার কথা স্বীকার করে নিলেও ওই ঘটনায় দলের কেউ জড়িত নয় বলে জানিয়েছেন।

Advertisement

ওই সিপিএমের নেতা, বর্ধমান দক্ষিণ দামোদরের রায়না মধ্য লোকাল কমিটির সদস্য কাশীনাথ বিশ্বাসের অভিযোগ, শুকুর গ্রামে তাঁর ইটভাটায় স্থানীয় রুটের দুটি বাস রাতে থাকে। এ ছাড়াও যাত্রীবাহী ছোট গাড়ি, ইট আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ট্রলি সমেত ট্রাক্টর, পাম্প যন্ত্রও ছিল ভাটায়। কাশীনাথবাবুর অভিযোগ, শনিবার সকাল পৌনে ৮টা নাগাদ একাধিক গাড়ি ও মোটরবাইক নিয়ে প্রায় ১৫০ জন তার ইটভাটার সামনে দাঁড়ায়। এরপরে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব বল্লা গ্রামের অনন্তকুমার বসু, হরিপুর গ্রামের পার্থসারথী বসু, সুকুর গ্রামের সুশান্ত মণ্ডল, নতু গ্রামের আজিজুর রহমান, খুঁয়ের পাড়ের শেখ কালো বাবুর নেতৃত্বে ইটভাটায় ঢুকে লোহার রড, শাবল-সহ ধারলো অস্ত্র দিয়ে ভাঙচুর চালায় তারা। ভয় পেয়ে ইটভাটার কর্মীরা ও বাস কর্মীরা একটি বাসের ভিতর আশ্রয় নিলে দুষ্কৃতীরা পাইপগান, বোম দেখিয়ে তাঁদের প্রাণে মারার হুমকিও দেয়। ভয় পেয়ে কোনওরকমে এলাকা ছেড়ে পালান তাঁরা। ভাঙচুর পর্ব মিটে যাওয়ার পরে ইটভাটার অফিস ঘর ভেঙে ভিতরে ঢুকে ওই দুষ্কৃতীরা দেড় লক্ষ টাকা লুঠ করে বলেও অভিযোগ। টাকা নেওয়ার পাশাপাশি দুষ্কৃতীরা ২টি পাম্প যন্ত্র, গ্যাস সিলেন্ডার-সহ ২টি ছাগল নিয়ে পালিয়ে যায়। কাশীনাথবাবুর দাবি, ‘‘আমি প্রাণ ভয়ে ইটভাটা ছেড়ে পালাই। না হলে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাকে প্রাণে মেরে দিত।’’ তাঁর আরও দাবি, তৃণমূলের ওই দুষ্কৃতীরা আমাকে খোঁজার সময় বারবার বলছিল, ‘সিপিএমের বড় বড় নেতারা ঘরে বসে গিয়েছে, আর উনি রায়নায় নতুন করে সিপিএমকে জাগাতে চাইছেন’ এরপরেই শুরু হয় তৃণমূলের নেতাদের নির্দেশে তাণ্ডব।”

সিপিএমের দাবি, গত ২ জুন রায়নায় চাষিদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা ও খেত মজুরদের কাজের দাবিতে পথ অবরোধ করা হয়। সেই দিনও তৃণমূলের হাতে মার খান স্থানীয় সিপিএম নেতা। এরপর কাশীনাথবাবুর নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। সিপিএম নেতাদের দাবি, রায়নায় সিপিএমের ঘুরে দাঁড়ানো রুখতেই এ সব করছে তৃণমূল।

Advertisement

তবে প্রকাশ্যে তৃণমূলের নেতারা এই ঘটনার পিছনে অর্থনৈতিক কারণ আছে বলে মনে করছেন। রায়নার তৃণমূলের সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ সাঁইয়ের দাবি, “ওই সিপিএম নেতার ইটভাটায় একটা ঘটনা ঘটেছে। এর পিছনে তৃণমূলের কেউ নেই। আমাদের সন্দেহ ইটভাটার পাওনাদারেরাই গোলমাল করেছে। সেটাকেই এখন রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।” তবে রায়নার বাসিন্দার তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য উদয় সরকার বলেন, “যত দিন যাচ্ছে তৃণমূলের কাছ থেকে মানুষ সরে যাচ্ছে, আর সে কারণেই এলাকায় সন্ত্রাস ও তোলাবাজি বজায় রাখার জন্য সিপিএমের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement