ওলট-পালট স্কুল পরিদর্শকের অফিস। ছবি: শৈলেন সরকার।
আচমকা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে ঢুকে হামলা চালাল এক দল দুষ্কৃতী। তাদের হাতে নিগৃহীত হলে আসানসোল শিক্ষা চক্রের স্কুল পরিদর্শক উত্তম মণ্ডল ও তাঁর দফতরের কয়েক জন কর্মী। ভাঙচুর করা হল আসবাবপত্র। কে বা কারা কেন এই হামলা চালাল, সে ব্যাপারে অন্ধকারে পুলিশ। কিছু জানাতে পারেননি স্কুল পরিদর্শকও।
স্কুল পরিদর্শক উত্তমবাবু আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশকে জানান, এ দিন বিকেলে তিনি দফতরের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন। হঠাৎই জনা দশেক দুষ্কৃতী দফতরে ঢুকে গালিগালাজ করতে থাকে। উত্তমবাবু বলেন, “আমরা ওদের এই ব্যবহারের প্রতিবাদ করতেই ওরা মারমুখি হয়ে ওঠে। চেয়ার-টেবিল, অন্য আসবাবপত্র ভাঙে। আমাদের নিগ্রহও করে।” উত্তমবাবু জানান, এ দিন তাঁর দফতরে আসার কথা ছিল না। সম্প্রতি তিনি হিরাপুর শিক্ষাচক্রের বাড়তি দায়িত্ব পেয়েছেন। ওই শিক্ষাচক্রের একটি কাজে এ দিন তিনি বার্নপুরে যান। সেখান থেকে কাজ সেরে ফেরার পথে তিনি আসানসোলের দফতরে ঢোকেন। উত্তমবাবু বলেন, “আমার গতিবিধি দুষ্কৃতীরা ভাল ভাবে নজরে রেখেছিল। তাই তারা এ ভাবে আক্রমণ চালাতে পেরেছে।” কিন্তু কেন এই আক্রমণ, তা তিনি বুঝতে পারছেন না বলে উত্তমবাবুর দাবি। ওই দুষ্কৃতীদের আগে কখনও দেখেননি বলেও জানান তিনি।
তবে ওই দফতরের কয়েক জন কর্মীর দাবি, দুষ্কৃতীরা হামলা চালানোর সময়ে বলছিল, ‘এই চেয়ারে বসে সিপিএম করছিস?’ ওই কর্মীদের দাবি, রাজ্য সকারের ‘শিক্ষারত্ন’ পুরস্কারের জন্য পছন্দের এক শিক্ষকের নাম সরকারের কাছে প্রস্তাব করতে সম্প্রতি চাপ দিচ্ছিলেন এক শিক্ষক নেতা। তা বিশেষ পাত্তা না পাওয়ার জেরেই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ওই কর্মীদের দাবি। স্কুল পরিদর্শক উত্তমবাবু অবশ্য বলেন, “অনেক শিক্ষক নেতাই নানা সময়ে নানা প্রস্তাব দেন। সে সব আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হয়। এ ক্ষেত্রে ওই ধরনের প্রস্তাব এসেছিল কি না, আমার মনে নেই।” তাঁর দাবি, কেউ যদি মনে করেন এই দফতর সরকার বিরোধী কাজকর্ম করছে, তবে যে কেউ এসে আলোচনা করতে পারতেন। কিন্তু হামলা করা উচিত নয় জানিয়ে উত্তমবাবু বলেন, “আমরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাঁরা আমাকে ডেকেছেন।”
এই ঘটনার নিন্দা করেছে শিক্ষক সংগঠনগুলি। এবিপিটিএ-র আসানসোলের সম্পাদক জয়ন্ত চক্রবর্তীর দাবি, “শিক্ষাক্ষেত্রে আক্রমণের আরও একটি ঘটনা ঘটল। সরকারকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।” তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের বর্ধমান জেলা সভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, “আমরা তীব্র নিন্দা করছি। পুলিশ দুষ্কৃতীদের খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করুক।”