খোদ কলকাতা হোক কিংবা গ্রামে অব্যাহত রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে বিজেপিতে যোগদানের ধারা।
রবিবার বর্ধমানের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে এই অনুষ্ঠানে তৃণমূল ও কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন প্রায় ৫০০ জন। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) দেবীপ্রসাদ মল্লিক, রাজ্য কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায় ও দলের রাজ্য নেতা সাক্ষীগোপাল ঘোষ। দেবীপ্রসাদবাবু জানান, বিজেপিতে নতুন যোগ দেওয়া এই কর্মীদের আপাতত দলের সব কর্মসূচিতে সাধারণ কর্মী হিসেবেই যোগ দিতে হবে। পরে তাঁদের কাজের মূল্যায়ন থেকেই পদ দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হবে।
এ দিন যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গেলেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বর্ধমান শহরে তৃণমূলের সাংস্কৃতিক কর্মী বলে পরিচিত বিপাশা বিশ্বাস, অভিনেতা তুহিন বন্দ্যোপাধ্যায়, বন্ডুল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য প্রণব পাল ও বর্ধমান টাউন কংগ্রেসের সহ সভাপতি শেখ ইদু। একই সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শহরের তৃণমূল নেতা অশোক সাঁতরা। এনি বছর কয়েক আগে রায়না বিধানসভায় বিজেপির প্রার্থী ছিলেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। রবিবার আবার ফিরলেন পুরনো দলে। অশোকবাবরু অভিযোগ, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সততা ও সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই দেখেই আমি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু দলের কোনও বৈঠকে আমাকে কিছু বলতেই দেওয়া হতো না। দলের অনেক নেতা প্রকাশ্যেই তোলাবাজি চালালেও দল ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
কয়েক দিন আগেই অরবিন্দ স্টেডিয়ামের হলঘরেই দলীয় কর্মী বৈঠকে শহর ও ব্লক নেতৃত্বকে সাবধান করে দিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় জানিয়েছিলেন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে দলের কোনও নেতা-কর্মী দল ছাড়লে যদি দলের কোনও ক্ষতি হয়, তাহলে তার দায় বইতে হবে সংশ্লিষ্ট এলাকার সভাপতিকে। যদিও এ দিনের এই ঘটনায় দলের কোনও ক্ষতিই হবে না বলে দাবি করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী ও বর্ধমানের তৃণমূল নেতা রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়।
উল্টো স্রোতও অবশ্য আছে। সিপিএম এবং বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিলেন প্রায় তিনশো জন। শনিবার কালনা ১ ব্লকের নান্দাই পঞ্চায়েতের সামনে তৃণমূলের এক সভায় তারা তৃণমূলে যোগ দেন। দলত্যাগীদের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ।
স্বপনবাবু বলেন, “দল যেমন পুরাতন কর্মী সমর্থকদের গুরুত্ব দেবে তেমনই অন্য দল থেকে যাঁরা আসবে তাঁদেরও কাজের সুযোগ দেবে।” এই অনুষ্ঠানে স্বপনবাবু আরও জানান, নান্দাই এলাকায় ২০ কিলোমিটার রাস্তার জন্য ১২ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ করেছে ন্যাবার্ড। তবে তিন বছর আগে টাকা বরাদ্দ হওয়ায় এই কাজের ঠিকেদার পাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে।