সিটুর বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
ইস্পাত কারখানার কনসিউমার কো-অপারেটিভ সোসাইটির নির্বাচনে মনোনয়ন তুলতে গিয়ে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের বিরুদ্ধে বাধা দান ও মারধরের অভিযোগ তুলল সিটু অনুমোদিত হিন্দুস্থান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন। মঙ্গলবার সিটুর তরফে দুর্গাপুর থানার সামনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভও দেখানো হয়।
১৯৫৭ সালে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্মীদের জন্য তৈরি করা হয় কনসিউমার কো-অপারেটিভ সোসাইটি। ২০০৯ সালে সোসাইটির শেষবার নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করে সিটু অনুমোদিত সংগঠনটি। ২০১২ সাল থেকে রাজ্য সমবায় দফতর মনোনীত সরকারি প্রতিনিধিরা ওই সোসাইটির দেখভাল করে। বর্তমানে ওই সোসাইটির সদস্য সংখ্যা প্রায় ন’হাজার। ২০১৫ সালে মোট ৪৫টি আসনের জন্য ফের নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়। নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই তৎপরতা চোখে পড়ে সিটু ও আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত শ্রমিক সংগঠন দু’টির। সোম ও মঙ্গলবার ছিল মনোনয়ন তোলার দিন। কিন্তু সিটুর অভিযোগ, তাঁদের সংগঠনের প্রার্থীরা সোমবার মনোনয়ন পত্র তুলতে গেলে বাধা দেয় আইএনটিটিইউসি সমর্থিত সংগঠনের কর্মী সমর্থকেরা। হিন্দুস্থান স্টীল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সৌরভ দত্তের অভিযোগ, “সোমবার তাঁদের সংগঠনের প্রার্থীরা এলাকায় গেলেই তাঁদের উপর চড়াও হন আইএনটিটিইউসি-র কর্মী সমর্থকেরা। পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।” মারধরের জেরে আহত শুভ্রাংশু ঘোষ ও সুকান্ত দাসকে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁদেরকে দেখতে হাসপাতালে যান সিটুর নব নির্বাচিত জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী। বংশবাবুর অভিযোগ, “শাসক দল আসলে সংগঠিত শ্রমিক আন্দোলনকেই ধ্বংস করতে চাইছে। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।”
সোমবারের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় তার জন্য মঙ্গলবার সকালে সিটুর তরফে দুর্গাপুর থানার সামনে বিক্ষোভ অবস্থানও করা হয়। সিটুর দাবি, নির্বাচন যাতে প্রহসনে পরিণত না হয় তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক প্রশাসন। কিন্তু এ সবের পরেও সিটু অনুমোদিত সংগঠনের প্রার্থীরা কোনও মনোনয়ন তুলতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সোসাইটির ক্ষমতা দখলের পথে আইএনটিটিইউসি সমর্থিত হিন্দুস্থান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন। সৌরভবাবু অভিযোগ, “কারখানার কর্মীরা পাশে নেই বুঝেই আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত সংগঠনটি গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করতে চাইছে।” যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত দুর্গাপুর স্টীল প্ল্যান্ট মজদুর ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত রক্ষিত দাবি করেন, “শান্তিপূর্ণ ভাবেই মনোনয়ন পর্ব মিটেছে। আমরা ছাড়া অন্য কোনও সংগঠন মনোনয়ন পত্র তোলেনি। নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতেই সিটু মিথ্যা অভিযোগ করছে।”