ভোট মিটলেও বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার বেশ কিছু বিক্ষিপ্ত গোলমাল হয়েছে কাটোয়া জুড়ে।
মঙ্গলকোটের পিন্ডিরা গ্রামে বুধবার রাতে কামু শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মী বাড়িতে বোমা ফেটে চার জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি কামু শেখের অভিযোগ, “আমি তৃণমূলের এজেন্ট ছিলাম। রাতে সিপিএমের লোকেরা আমার ঘরে বোমা মারে। আমার স্ত্রী ও দুই শিশুও জখম হয়েছে।” চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কামু শেখ ও তার পুত্র মিরজান আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন। তবে পুলিশের ধারণা, বাড়ির ভিতরে থাকা বোমা ফেটেই ওই পরিবার জখম হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে কাটোয়ার পেকুয়া গ্রামেও তৃণমূল সমর্থিত একটি বাড়িতে সিপিএমের দুষ্কৃতীরা বোমা ছোড়ে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, কাটোয়া শহর এলাকার এক দাগি দুষ্কৃতীর লোকেরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। শুক্রবার দুপুরে এ ব্যাপারে কাটোয়া থানায় অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল। দুটি ক্ষেত্রেই সিপিএম অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে কেতুগ্রামের আনখোনা গ্রামে একটি পুকুর থেকে একটি হাতকামান উদ্ধার করেছে পুলিশ। তা নিয়ে সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, আনখোনা গ্রামের মিরপাড়া সিপিএম অধ্যুষিত। সেখানকার একটি পুকুরে সিপিএমের লোকেরা ওই হাতকামান লুকিয়ে রেখেছিল। যদিও সিপিএম অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাঁদের পাল্টা দাবি, তৃণমূলই পুকুরে হাতকামান ডুবিয়ে রেখে পুলিশকে খবর দেয়। তারপর পুলিশকে সামনে রেখে দুটি বাড়িতে হামলাও চালায়। এই ঘটনার আগে তাদের দুই কর্মীকে তৃণমূল মারধরও করে বলেও সিপিএমের অভিযোগ। এই আনখোনা গ্রামেই ভোটের দিন দুপুরে এজেন্ট বসা নিয়ে সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে গোলমাল হয়। ইটের ঘায়ে দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন আহতও হন।
তবে ভোটের দিন আগরডাঙা গ্রামের হাই মাদ্রাসা বুথে বোমাবাজি ঘটনায় শুক্রবারও কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। ওই দিন কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে বোমাবাজি হয়। উভয় পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে কেতুগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরেই বহিরাগত দু’জনকে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ না থাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ঘটনার দু’দিন পরেও এলাকা থমথমে।
দুর্গাপুরেও নির্বাচনের কাজ সেরে ফেরার পথে সিপিএমের তিন নির্বাচনী এজেন্টকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। সিপিএমের দাবি, পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও কেউ ধরা পড়েনি। উল্টে তারা লাগাতার হুমকি দিচ্ছে বলে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন এক এজেন্ট। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক তথা সহকারী রিটার্নিং অফিসার কস্তুরি সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, ওই অভিযোগকারীরা শুক্রবার তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।