জামিনের শর্ত অনুযায়ী থানায় হাজিরা না দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালানোর অভিযোগে বুদবুদ থানা এলাকায় প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৃণমূল নেতা বামদাস ওরফে বামদেব মণ্ডলকে আটক করেছিল পুলিশ। পরে তাঁর কাছ থেকে ৪৭ কিলোগ্রাম গাঁজা ও চারটে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। সোমবার সকালে সেই অভিযোগে ওই তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতারও করে বুদবুদ থানার পুলিশ। এ দিনই তাঁকে আদালতে তোলা হলে বর্ধমানের মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারক তাঁকে ফের চার দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। তবে বামদাসের আইনজীবী সদন তার দাবি, ‘‘অন্যায় ভাবে পুলিশ আমার মক্কেলকে ফাঁসাচ্ছে।’’
গত ৩ জুলাই রায়নার ওসি সঞ্জয় রায়কে মারধর ও বোমা পাচারের অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে পুলিশ স্থানীয় তৃণমূল নেতা বামদাস মণ্ডলকে গ্রেফতার করে। সাত দিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পরে শর্ত সাপেক্ষে গত শুক্রবার জামিন পান বামদাস-সহ ধৃত আরও ২৬ জন। রবিবার দুপুরেই বামদাসের স্ত্রী মহেশ্বরীদেবী রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের কাছে চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ করেন, রায়নার ঘটনায় জামিন পাওয়ার পরের দিন সকালে বর্ধমান থানা থেকে তিনটে মোবাইল আনতে যান বামদাস। পুলিশ তাঁর সঙ্গে থাকা তৃণমূলের কর্মী আব্দুল কালাম আজাদকে বর্ধমান থানায় বসিয়ে রেখে একটি গাড়িতে করে বামদাসকে তুলে নিয়ে যায় বলেও তাঁর অভিযোগ। এরপর থেকে ওই নেতার কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে মহেশ্বরীদেবীর অভিযোগ। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছিল, বামদাস মণ্ডল জামিনের শর্ত অনুযায়ী প্রতিদিন থানায় হাজিরা না দিয়ে দুর্গাপুরের দিকে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় বুদবুদ থানার পুলিশ তাঁকে আটক করে।
বর্ধমান জেলা আদালতে পুলিশ জানিয়েছে, রায়না থানা থেকে একটি খবর আসে, বামদাস জামিনের শর্ত না মেনে একটি মোটরবাইকে চড়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। এই খবর পাওয়া মাত্র জেলা জুড়ে তল্লাশি শুরু হয়ে যায়। তল্লাশি চলাকালীন রবিবার রাতে বুদবুদ থানা এলাকা থেকে আটক করা হয় বামদাসকে। তারপর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ তাঁর কাছ থেকে গাঁজা, একটি পাইপগান ও দুটি পিস্তল উদ্ধার করে। এ দিন আদালতে ঘটনার তদন্তকারী অফিসার বামদাসের সাত দিন পুলিশ হেফাজত চেয়ে আবেদন করেছিলেন। বিচারক অবশ্য চার দিনের নির্দেশ দিয়েছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) তথা রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে।”
পুড়ে মৃত্যু। আগুনে পড়ে মারা গেলেন এক বৃদ্ধ। জখম তাঁর স্ত্রী-ও। সোমবার বিকেলে দুর্গাপুরের ইস্পাতপল্লি সি জোনের রাজেন্দ্রপ্রসাদ অ্যাভিনিউ-এর ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে মৃতের নাম, নিত্যানন্দ মুখোপাধ্যায় (৭২)। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুরে বাড়িতে নিত্যানন্দবাবু ও তাঁর স্ত্রী ছাড়া বৌমা ও নাতি বাড়িতে ছিলেন। বৌমা মৃন্ময়ীদেবী জানান, আচমকা শাশুড়ির চিৎকার শুনতে পান। পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন শ্বশুর ও শাশুড়ির গায়ে আগুন লেগে গিয়েছে। প্রতিবেশীরা এসে দগ্ধ অবস্থায় নিত্যানন্দবাবু ও কল্যাণীদেবীকে বাড়ির বাইরে আনেন। আগুন নেভানোর কাজও শুরু করেন প্রতিবেশীরা। দু’জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে নিত্যানন্দবাবুকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা। কল্যাণীদেবীকে ওই হাসপাতালেই ভর্তি করানো হয়েছে। দমকলের একটি ইঞ্জিন কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদে গায়ে আগুন লাগান ওই দম্পতি।