বকেয়া বিদ্যুত্‌ বিল চেয়ে ফের চিঠি

বকেয়া বিদ্যুত্‌ বিল মেটাতে কালনা পুরসভাকে নোটিশ দিল বিদ্যুত্‌ বন্টন দফতর। ২৯ মে কালনা স্টেশন ম্যানেজার পুরপ্রধানকে লেখা ওই চিঠিতে জানান, রাস্তার আলো বাবদ বকেয়া বিল ১৫ দিনের মধ্যে না দিলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৪ ০০:৩৮
Share:

এ ধরণের পথবাতির বিলই বকেয়া রয়েছে কালনা পুরসভার।—নিজস্ব চিত্র।

বকেয়া বিদ্যুত্‌ বিল মেটাতে কালনা পুরসভাকে নোটিশ দিল বিদ্যুত্‌ বন্টন দফতর। ২৯ মে কালনা স্টেশন ম্যানেজার পুরপ্রধানকে লেখা ওই চিঠিতে জানান, রাস্তার আলো বাবদ বকেয়া বিল ১৫ দিনের মধ্যে না দিলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। বুধবার পর্যন্ত অবশ্য বিলের টাকা জমা পড়েনি বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, জলের পাম্প, গেস্ট হাউস, পুরশ্রী মঞ্চ, পুরভবন-সহ নানা জায়গা মিলে প্রতি মাসে আট লক্ষেরও বেশি টাকা বিল হয়। যার মধ্যে ৫২০০টি পথবাতির জন্যই লাখ দু’য়েক টাকা বিল ওঠে। ফলে পুরসভার মাসিক আয়ের একটা বড় অংশই চলে যায় বিদ্যুতের বিল মেটাতে। এই পরিস্থিতিতে মাস ছয়েক আগে তৃণমূল-কংগ্রেস জোট চালিত পুরসভা সিদ্ধান্ত নেয়, আপাতত তারা পথবাতির টাকা দেবে না। পুরসভার যুক্তি, পথবাতি জ্বালিয়ে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেয় পুরসভা। কিন্তু তা থেকে কোনও আয় হয় না। আবার শহরের অজস্র বাতিস্তম্ভ থেকে বিদ্যুত্‌ বন্টন দফতর বছরের পর বছর আয় করে অথচ পুরসভাকে তা বাবদ কোনও কর দেয় না। পুরসভার তরফে সিদ্ধান্ত হয়, রাস্তার আলোর বিল বকেয়া রেখে বিদ্যুত্‌মন্ত্রী-সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হবে এবং বিদ্যুত্‌ দফতরের কাছে পথবাতির ব্যাপারে ছাড় চাওয়া হবে। তাতে দফতর রাজি না হলে খুঁটি পুঁতে ব্যবসা করার জন্য কর চাওয়া হবে। তবে পুরসভার ওই চিঠির কোনও সদুত্তর মেলেনি।

এ দিকে বকেয়া না পেয়ে বিদ্যুত্‌ দফতরের তরফে বারবার চিঠি পাঠায় পুরসভাকে। এপ্রিল মাস নাগাদ বিদ্যুত্‌ দফতরের কালনা ডিভিশন সিদ্ধান্ত নেয় ভোট মিটলেই কড়া চিঠি পাঠানো হবে। ডিভিশনের কর্তারা বিষয়টি নিয়ে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে কথাও বলেন। ২৯ মে পাঠানো চার পাতার চিঠিতে কালনার স্টেশন ম্যানেজার অর্ণব দাম জানান, কোন কোন মিটারে কত টাকা বকেয়া রয়েছে। দেখা যায় মোট বকেয়ার পরিমাণ ১২ লক্ষেরও বেশি। বুধবার ওই ডিভিশনের কালনা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শুধু বকেয়াই নয়, সব টাকা না দেওয়ায় আরও অতিরিক্ত টাকাও দিতে হবে পুরসভাকে। ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়র চঞ্চল বিশ্বাস বলেন, “আজ, বৃহস্পতিবার পুরপ্রধানের সঙ্গে কথা বলব। পুরসভা বিল মেটাতে না চাইলে নিয়ম অনুযায়ী রাস্তার আলোর সংযোগ কেটে দেওয়া হবে।” এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনও নির্দেশ আসেনি বলেও জানান তিনি।

Advertisement

পুরসভার তরফে অবশ্য এখনই বিল মেটানোর কোনও আশ্বাস মেলেনি। পুরপ্রধান বিশ্বজিত্‌ কুণ্ডু বলেন, “বিদ্যুত্‌ বিলের টাকা রাখা রয়েছে। তবে আমরা এখনই টাকা নয়, চিঠি পাঠিয়ে আমাদের দাবি জানাব। বিষয়টি বিধানসভাতেও তোলা হয়েছে।” কিন্তু পথবাতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে? বিশ্বজিত্‌বাবু বলেন, “আগে হোক তারপর দেখা যাবে।” পুরসভার আলো বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর আনন্দ দত্ত বলেন, “রাজ্যের সব কর্পোরেশন বিদ্যুতের টাকা পায়। অথচ পুরসভা পায় না। আমরাই রাজ্যের প্রথম পুরসভা যারা পরিষেবামূলক কাজে ব্যবহৃত বিদ্যুত্‌ বিলে ছাড়ের দাবি করছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement