সেই বুদ্ধমূর্তি। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালায় একটি বুদ্ধমূর্তি দান করলেন চন্দ্রচূড় মুখোপাধ্যায়। বর্ধমানের বি বি ঘোষ রোডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী চন্দ্রচূড়বাবুর বাড়িতেই ছিল শ্বেতপাথরের এই মূর্তিটি। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালার কিউরেটর রঙ্গনকান্তি জানা বলেছেন, “শহরের কৃষ্ণসায়রের কাছে একটি বৌদ্ধ মন্দিরের খোঁজও মিলেছে। সব মিলিয়ে এই জনপদে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বাস থাকার চিন্তাটি পুষ্টি পেয়েছে।”
চন্দ্রচূড়বাবু জানান, ১৯৭৪ সালে বাম গ্রামে চাষ করার সময়ে মূর্তিটি পাওয়া যায়। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে মূর্তিটি যায় শহরের বিশিষ্ট নাগরিক বর্তমানে প্রয়াত আব্দার রশিদের হাতে। চন্দ্রচূড়বাবু বলেন, “রশিদ সাহেব আমাকে মূর্তিটি দিয়েছিলেন।” তারপর থেকে ৪০ বছর ধরে মূর্তিটি তাঁরই কাছে রয়েছে। তিনি বলেন, “মূর্তিটি যে আমার কাছে রয়েছে, তা আমি বর্ধমানের পুলিশ সুপার, জেলাশাসক, কলকাতা ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। তখন কেউ ওটিকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চায়নি। উল্টে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন কিউরেটর আমাকে জানিয়েছিলেন, ওই মূর্তি রাখাবার মতো যথেষ্ট জায়গা তাঁদের নেই।”
সম্প্রতি চন্দ্রচূড়বাবুর বাড়ির ছবি তুলতে গিয়ে সেই মূর্তির খোঁজ পান শহরের ইতিহাস অনুসন্ধিৎসু বর্ধমান বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল বয়েজ স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক সঞ্জীব। তিনি চন্দ্রচূড়বাবুকে বলেন, ওই মূর্তিটি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালায় রাখা হলে ভবিষ্যতে গবেষকেরা উপকৃত হবেন। চন্দ্রচূড়বাবু তাতে রাজি হলে সঞ্জীববাবু বিশ্ববিদ্যালয়ের কিউরেটর রঙ্গনকান্তিবাবুকে মূর্তিটির কথা জানান।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেছেন, “কিউরেটর রঙ্গনবাবু আমাকে বলেন, বর্ধমান শহরের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে একটি প্রাচীন বুদ্ধমূর্তি রয়েছে। সেটি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে দিতে রাজি আছেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বলি, তাহলে আপনি ওই মূর্তি যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা পড়ে তার ব্যবস্থা করুন। রঙ্গনবাবু সফল হয়েছেন, দেখে ভাল লাগছে।”
কয়েকদফার আলোচনার পরে চন্দ্রচূড়বাবু সম্প্রতি নিজের লোকদের দিয়ে মুর্তিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠিয়ে দেন। মুর্তিটির ওজন প্রায় ৯০ কিলো। উচ্চতা ২ ফুট, চওড়া ১ ফুট। রঙ্গনবাবুর দাবি, “যে পাথরে বুদ্ধমূর্তিটি তৈরি, সেটি এদেশের নয়। সম্ভবত বিদেশ থেকে আনানো বলেই প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হচ্ছে।”