বেআইনি টোটো তোলার দাবিতে বন্ধ মিনিবাস

শহরে অসংখ্য অনিয়ন্ত্রিত টোটো চলার অভিযোগে আচমকা দিনভর বাস চলাচল বন্ধ করে দিল টাউন সার্ভিস সমিতি। তাঁদের দাবি, বেআইনি টোটোগুলি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। জেলাশাসকের কাছে এ নিয়ে অভিযোগও জানান তারা। এ দিকে, কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই এই বন্ধে শহরের মধ্যে চলাচলে মুশকিলে পড়ে যান বহু মানুষ। তাঁদের দাবি, সকালের দিকে দু’একটি বাস চললেও বেলা বাড়তেই তাদের আর দেখা মেলেনি। টাউন সার্ভিসের অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায় বহু মানুষকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:২৩
Share:

শহরের রাস্তায় টোটোর ভিড়। নিজস্ব চিত্র।

শহরে অসংখ্য অনিয়ন্ত্রিত টোটো চলার অভিযোগে আচমকা দিনভর বাস চলাচল বন্ধ করে দিল টাউন সার্ভিস সমিতি। তাঁদের দাবি, বেআইনি টোটোগুলি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। জেলাশাসকের কাছে এ নিয়ে অভিযোগও জানান তারা। এ দিকে, কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই এই বন্ধে শহরের মধ্যে চলাচলে মুশকিলে পড়ে যান বহু মানুষ। তাঁদের দাবি, সকালের দিকে দু’একটি বাস চললেও বেলা বাড়তেই তাদের আর দেখা মেলেনি। টাউন সার্ভিসের অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায় বহু মানুষকে।

Advertisement

বর্ধমান টাউন সার্ভিস বাস ওনার্স সমিতির কার্যকরী সদস্য প্রদ্যুত্‌ সামন্তের অভিযোগ, “নবাবহাট থেকে আলিশা পর্যন্ত যে ভাবে দিনের পর দিন টোটোর সংখ্যা বেড়েছে, তাতে মিনিবাস চালিয়ে লাভ তো দূরের কথা, চালক, কন্ডাক্টরদের বেতন পর্যন্ত দিতে পারছি না। নির্দিষ্ট বেতনের দাবিতে কয়েকদিন ধরেই বাসকর্মীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। সোমবার সকালে বাস ফেলে রেখে চলে যান তাঁরা।” সমিতির সদস্যদেরও দাবি, প্রশাসনকে টোটো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ও বেআইনি টোটো বাতিল করতে হবে।

গত ২৯ ডিসেম্বর বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে মিনিবাস মালিক সমিতির সঙ্গে পুর প্রতিনিধি ও প্রশাসনের একটি বৈঠক হয়। সেখানেও টাউন সার্ভিস সমিতির তরফে দাবি করা হয়, ব্যাটারিচালিত এই গাড়িগুলি কোনও নির্দিষ্ট রুট ছাড়া পারমিটহীন অবস্থায়, সময়সীমা না মেনে চলছে। গাড়িগুলিকে বেআইনি ঘোষণা করে বাতিল করারও দাবি করেন তাঁরা। এছাড়া তিন চাকার টোটোয় সাত জনেরও বেশি যাত্রী ওঠায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তাঁরা। বাস মালিকদের দাবি, ওই অসংখ্য টোটো শহরের বুকে দাপিয়ে বেড়ানোয় যাত্রীরা বাসে উঠছেন না।

Advertisement

ওই বৈঠকে পুর প্রতিনিধিদের তরফে বলা হয়েছিল, মাত্র ৭৫টি টোটোকে অনুমোদন দেওয়া হবে। তবে অতিরিক্ত যে টোটোগুলি শহরে রয়েছে, সে ব্যাপারে পুরসভার কিছু করার নেই। এ দিনও পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত বলেন, “তিনদিনের মধ্যে যে টোটোগুলি পুরসভার অনুমতি নিয়ে কেনা হয়েছিল তাদের চিহ্নিত করা হবে। তবে বাকি টোটোর দায় পুরসভার একার নয়।” তিনি জানান, পুলিশ, প্রশাসন ও পরিবহণ দফতরের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “ওই টোটোগুলি পরিবহন দফতরের অনুমোদিত নয়। টোটো নিয়ন্ত্রণ করতে হলে পদক্ষেপ করতে হবে পুরসভাকেই। তবে পুরসভা যদি মনে করে সাহায্য দরকার, তাহলে আমরা সাহায্য করব।”

টোটোর জেরে শহরে যে ব্যাপক যানজট দেখা দিয়েছে তা কবুল করেছে পুলিশও। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা শহরের মধ্যে বাস ঢুকতে না দিয়ে ভেবেছিলাম যানজট কমবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যানজট কমার বদলে টোটোদের জন্য বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু এই যানগুলি যেহেতু কোনও সরকারি দফতরের লাইসেন্সপ্রাপ্ত নয়, তাই এদের নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে পুলিশেরও কিছু করার নেই।” পুলিশের দাবি, কতগুলি টোটো শহরে চলছে তা নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে বলা হবে পুরসভাকে।

কিন্তু অনুমোদনহীন টোটো নিয়ে পুরসভার তরফে স্পষ্ট উত্তর না মেলায় এই বিপুল সংখ্যক টোটো কে নিয়ন্ত্রণ করবে, কীভাবে করবে কিংবা আদৌও করা হবে কি না তা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েই গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement