উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। —নিজস্ব চিত্র।
ফের অস্ত্র মিলল পূর্বস্থলীতে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের জাহান্নগর মোড় থেকে চারটি হাতে তৈরি পাইপগান, ৯ রাউন্ড গুলি ও চারটি মোবাইল উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে পাঁচ দুষ্কৃতীকেও। ধৃতদের নাম ছাদারুদ্দিন শেখ, নাদু শেখ, সাবির আলি, ইয়ার আলি শেখ ও রহিম শেখ। এদের মধ্যে প্রথম তিন জনের বাড়ি পূর্বস্থলী থানা এলাকার বাবুইডাঙা গ্রামে। বাকি দু’জন নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানার আকুলডাঙা গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার ধৃতদের কালনা আদালতেও তোলা হয়েছে।
পুলিশ তদন্তে নেমে জেনেছে, সপ্তাহখানেক আগে থেকেই দুষ্কৃতীদের একটি দল বাবুইডাঙা এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে। তাদের কাছে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে বলেও খবর পায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে লক্ষ্মীপুর এলাকা থেকে ট্রেন ধরে ভাণ্ডারটিকুরি স্টেশনে নামে দলটি। স্টেশনে তাদের গতিবিধি নজরে রাখে পুলিশ। পরে রাত ১১টা নাগাদ জাহান্নগর মোড়ের কাছে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো হয় তারা। ততক্ষণে খবর পৌঁছে যায় মহকুমা পুলিশের কাছে। কালনার এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ সরকার, সিআই রাকেশ মিশ্র, নাদনঘাট থানার ওসি সনৎ দাস-সহ পুলিশের একটি দল তাদের ঘিরে ফেলে। দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর চেষ্টা করলেও সফল হয়নি। তবে ধস্তাধস্তিতে হাতে আঘাত পেয়েছেন সনৎবাবু। পুলিশের দাবি, ওই দলটিতে আরও কয়েকজন যুক্ত রয়েছে। তাদেরও ধরার চেষ্টা চলছে। এসডিপিও ইন্দ্রজিৎবাবু বলেন, দুষ্কৃতীরা কীভাবে অস্ত্রগুলি পেয়েছিল এবং তাদের কাছে আরও অস্ত্র রয়েছে কি না তা জেরায় জানার চেষ্টা চলছে।
দিন দশের আগে পূর্বস্থলীর সিংহারি গ্রাম থেকেও পাঁচটি পাইপগান ও পাঁচ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছিল পুলিশ। এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রগুলি বিক্রি করার জন্য সেখানে জড়ো হয়েছিল দুষ্কৃতীরা। পুলিশ জানিয়েছে, দুটি ঘটনায় উদ্ধার হওয়া অস্ত্রই হাতে তৈরি। সেক্ষেত্রে এলাকাতেই কোথাও বেআইনি অস্ত্র কারখানা গড়ে উঠেছে কি না সে প্রশ্নও উঠছে।
পূর্বস্থলীতে অবশ্য হাতে তৈরি অস্ত্র এর আগেও উদ্ধার হয়েছে। ২০১২ সালে পুলিশ ও সিআইডি অভিযান চালিয়ে বহু অস্ত্র উদ্ধার করে। সে সময় তদন্ত করে বেশ কিছু এজেন্টদের খোঁজ পেয়েছিল পুলিশ যারা অস্ত্র সরবরাহের কাজ করত। পূর্বস্থলী সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় নদিয়া, মুর্শিদাবাদ থেকেও অস্ত্র আসত বলে পুলিশের অনুমান। সেই সময় আরেক শ্রেণির ব্যবসায়ীদেরও খোঁজ পায় পুলিশ, যারা ভুয়ো লাইসেন্সের বিনিময়ে চড় দামে বন্দুক বিক্রি করত। হুগলি থেকে ওই ভুয়ো লাইসেন্স তৈরিতে ব্যবহৃত বহু নকল স্ট্যাম্পও উদ্ধার করেছিল পুলিশ।