এই আবাসনে রয়েছেন দোলা।
এক জন ছিলেন মুম্বইয়ে। অন্য জন এসেছেন কলকাতা থেকে। মাস দুয়েকের জন্য এখন তাঁদের ঠিকানা আসানসোল। শহরে এসে দু’জনেই নেমে পড়েছেন প্রচারে। দিনভর কড়া পরিশ্রমের পরে নিশ্চিন্তে হাত-পা ছড়িয়ে থাকার মতো ঠাঁই প্রয়োজন ছিল দু’জনেরই। বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় ও তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেন, দু’জনেই তাই খুঁজে নিয়েছেন অস্থায়ী ঠিকানা।
শহরে প্রথম এসে বাবুল উঠেছিলেন একটি হোটেলে। সে বার দিন দুয়েকের বেশি থাকেননি। তার পরের বারও এসে প্রথমে ওঠেন অন্য একটি হোটেলে। কিন্তু ঠিক মতো হাত-পা ছড়িয়ে থাকা বা দলের নেতা-কর্মীদের অবাধ আনাগোনাহোটেলে দুয়েরই সমস্যা। তাই শেষে বাবুল উঠে গিয়েছেন মহিশীলায়। সেখানে একটি বহুতলের তিনতলায় ঘর ভাড়া নিয়েছেন। দিন তিনেক আগে থেকে সেখানেই থাকছেন তিনি। তিন কামরার এই ফ্ল্যাটে একটি ঘর তাঁর নিজের। অন্য একটি ঘরে এখন রয়েছেন তাঁর বাবা-মা। বাকি ঘরটি রেখেছেন নিজের নিরাপত্তাকর্মীদের জন্য। রান্না করার জন্য লোক রেখেছেন। এখন তাই বাড়িতে তৈরি খাবার খেয়েই প্রচারে বেরোচ্ছেন তিনি। শিল্পাঞ্চলের চড়া গরমের জন্য বাবুলের এই অস্থায়ী ঠিকানায় বাতানুকূলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাবুলের আবাসন।
মহিশীলার এই নিরিবিলি আস্তানায় বেশ ভালই লাগছে বলে জানালেন বাবুল। তবে ভক্তদের ঠেলা-গুঁতো সইতে হচ্ছে এখানেও। সকাল-সন্ধ্যা নিয়ম করে ঝুল বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাত নাড়তে হচ্ছে। সময়-অসময়ে দু’কলি গান গেয়েও শোনাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, “কী আর করা যাবে! হাজার হোক, জনপ্রতিনিধি হতে চলেছি যে।” এমন স্টার গায়ককে প্রতিবেশী হিসেবে পেয়ে খুশি আশপাশের বাসিন্দারাও।
আসানসোলের এস বি গড়াই রোডে একটি আবাসনে নিজের অস্থায়ী ঠিকানা বানিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী দোলা। একটি বড় সভাকক্ষ-সহ তিন কামরার ফ্ল্যাট ভাড়া করেছেন তিনি। নিজের বিশ্রামের জন্য বরাদ্দ রেখেছেন একটি ছোট কামরা। বাকি সবটাই দলের কর্মী-সদস্যদের জন্য। একতলার সিড়ি দিয়ে উপরে উঠলেই প্রথমে তাঁর এই সভা কক্ষ। সেখানে তিনি থাকুন বা না থাকুন, দলীয় নেতা-কর্মীরা হাজির। গভীর আলোচনা চলছেই তাঁদের মধ্যে। দোলা বলেন, “এটাই আমার কেন্দ্রীয় নির্বাচনী দফতর। এখান থেকেই গোটা এলাকায় ভোট সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালনা করছি।” দেখা গেল, দলের কর্মী-সদস্যেরা আপাদমস্তক ঘিরে রেখেছেন এই বাড়িটিকে। ভোটে জিতলে কি তার পরে এখানেই থাকবেন? তিনি জানান, সে সিদ্ধান্ত এখনও নেননি। পরে ঠিক করবেন। তবে তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর আসানসোলের বার্নপুর রোডে তাঁর জন্য সাজিয়ে রাখা হচ্ছে একটি বাড়ি।
কে হারলেন, কে জিতলেন, বলবে ১৬ মে। তার আগে প্রচার সেরে নিশ্চিন্তের ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন এই দুই প্রার্থী।
ছবি: শৈলেন সরকার।