দুর্গাপুরের একটি শপিং মলে।—নিজস্ব চিত্র।
সারা বছর কলেজ, টিউশন, আড্ডা, ফেসবুকে ব্যস্ত অষ্টাদশীদের ফ্যাশন মানে জবরজং গয়না, ভারি শাড়ি নয়, বরং রোজকার পোশাকে নতুনত্বের ছোঁয়া। তবে এই নতুনত্বের খোঁজে তাঁরা একাই নন, রয়েছেন মধ্য তিরিশের মহিলারাও। পুজোয় তাই দৈনন্দিন জিনস-কুর্তির সঙ্গে বাহারি দোপাট্টা, কিংবা একরঙা প্যান্টের সঙ্গে রংবাহারি বেল্টই হিট এ বছর।
আঠেরো থেকে আটচল্লিশের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়েছে বিপণিগুলিও। সাবেক দোকানগুলি নিজেদের কারখানাতেই তৈরি করছেন বিভিন্ন ডিজাইনের চুড়িদার, সালোয়ার। তাছাড়া নানা ধরণের কুর্তি, কামিজ তো আছেই। দোকান ঘুরে দেখা গেল, অনেকেরই পছন্দ পাতিয়ালা। ক্রেতাদের কথা, পছন্দ মতো কুর্তি-দোপাট্টার সঙ্গে ‘মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ’ করলে পাতিয়ালা অতুলনীয়। দেদার বিকোচ্ছে ফুলহাতা কামিজ, রুমাল কাট বা কাপতান কাট কুর্তি, স্লিভলেস ছোট ঝুলের কুর্তা, নেটের কামিজও। আগের বারের মতো চাহিদা রয়েছে কলিদার বা আনারকলিরও। এছাড়া হেভি সিল্ক, জুট, কটন, শিফন, লিনেন, বা সিল্কের সালোয়ারও এ বছর ইন। রঙেও রয়েছে বৈচিত্র্য। শপিংমল ও বড় দোকান ঘুরে দেখা গেল পাখি চুড়িদার, আনারকলি চুড়িদার, ফ্রক চুড়িদার, কাঁথাস্টিচের কাজ করা চুড়িদার, ব্রাসো কাপড়ের চুড়িদার বেশ নজর কাড়ছে। স্টেশন বাজারের ব্যবসায়ী অমর পান জানান, বিভিন্ন ধরণের পোশাক বিক্রি হলেও আনারকলি ও পাখি চুড়িদারের চাহিদাই এ বছর বেশি।
বেনাচিতি বাজারে দেখা মিলল অষ্টম শ্রেণির রুম্পা গড়াইয়ের। রুম্পা বলে, “সারা বছর এটা-সেটা কেনা হতেই থাকে। কিন্তু পুজোয় চাই অন্যরকম।” ব্যবসায়ীরা জানান, কমবয়েসীদের রোজকার সাজে বৈচিত্র্য আনতে রঙবেরঙের বেল্ট অসামান্য সংযোজন। এ বছর ছোট ঝুলের ড্রেসও টিনএজারদের বিশেষ পছন্দের। অনেকে আবার একটু সাহসী পোশাকে নতুনত্বের স্বাদ পেতে চাইছেন। তাই হাই নেক টপ আর পেন্সিল স্কার্ট বা ওয়েল ফিটেড স্কার্টে নজর অনেক বেশি। ক্যাজুয়াল লুকের জন্য কারগো, ফিশারম্যান প্যান্টের চাহিদাও রয়েছে। বিভিন্ন ডিপ রঙের টপের সঙ্গে হাঁটু ঝুলের লেগিনস ও বেশ হিট এ বছর।
মধ্য তিরিশের চাকুরিরতা মহিলাদের অনেকেও সারা বছরের শাড়ি, চুড়িদার থেকে বেরিয়ে অন্যরকম সাজতে চাইছেন এ চার দিন। তাদের জন্যে একদিকে যেমন সুতি, সিল্ক, জর্জেট, শিফনের চুড়িদার পিস পাওয়া যাচ্ছে তেমনই নামি দামী কোম্পানি বিভিন্ন রকমের পাশ্চাত্য পোশাকের সম্ভার সাজিয়েছে শপিং মলগুলিতে। অনেকেই লম্বা ঝুলের ফ্যাশনেবল কুর্তির সঙ্গে ট্রাউজারে ঝুঁকছেন এ বছর। এছাড়া স্লিভলেস টপের সঙ্গে হাঁটু ঝুলের স্কার্ট বা পালাজোও নজরকাড়া কম্বিনেশন। বছর আটত্রিশের মিতা ঘোষ বাজার করছিলেন সিটি সেন্টারের একটি শপিং মলে। তাঁর কথায়, “সারা বছর তো শাড়ি পরেই কেটে যায়। চারদিন একটু আলাদা পোশাক ট্রাই করি না!” ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রঙের ক্ষেত্রে হাল্কা লাল, সি-গ্রিন, নীল, সবুজ, ম্যাজেন্টা রঙ চোখ টানছে বেশিরভাগ ক্রেতাদের।