দখল তুলতে যেতেই অশান্তি, জখম পুলিশ

সরকারি খাস জমি দখল করে রেখেছে ইটভাটা, এই অভিযোগ পেয়ে জমি দখলমুক্ত করতে গিয়ে হেনস্থা হতে হল সরকারি আধিকারিককে। ইট-পাটকেলে জখম হলেন দুই পুলিশকর্মীও। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে জামুড়িয়ার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। পুলিশ জানায়, দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০১:২৭
Share:

ভাঙচুর গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

সরকারি খাস জমি দখল করে রেখেছে ইটভাটা, এই অভিযোগ পেয়ে জমি দখলমুক্ত করতে গিয়ে হেনস্থা হতে হল সরকারি আধিকারিককে। ইট-পাটকেলে জখম হলেন দুই পুলিশকর্মীও। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে জামুড়িয়ার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। পুলিশ জানায়, দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জামুড়িয়ার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের জামুড়িয়া গ্রামে ইটভাটা মালিক শেখ ফিরোজ বছর দশেক আগে বাড়ির পাশে বেশ খানিকটা খাস জমি পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দখলে নেন বলে এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ। বছর দুয়েক ধরে এ নিয়ে বারবার ঝামেলা-গণ্ডগোল বেধেছে। মাসখানেক আগে কয়েক জন বাসিন্দা ও তৃণমূলের একাংশ বিএলএলআরও দফতরে গিয়ে ওই জমি দখলমুক্ত করার দাবি জানান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে বিএলএলআরও দফতরের এক আধিকারিক জয়দীপ মল্লিক-সহ তিন জন প্রতিনিধি একটি যন্ত্র নিয়ে পাঁচিল ভাঙার জন্য শেখ ফিরোজের বাড়ির কাছে যান। কিন্তু ফিরোজের পরিবারের তরফে পাঁচিল ভাঙার ব্যাপারে আদালতের স্থগিতাদেশ হিসেবে একটি নথি দেখালে জয়দীপবাবু অন্যদের নিয়ে ফিরে আসছিলেন। কিন্তু খানিকটা যেতেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা নীলু চক্রবর্তী, শেখ দিলদারদের নেতৃত্ব কিছু লোকজন তাঁদের ঘিরে ধরে দাবি করেন, ভুয়ো নথি দেখে তাঁরা ফিরে যাচ্ছেন। ওই আধিকারিক তাঁদের বুঝিয়ে বলতে গেলে তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলে অভিযোগ। তা দেখে অদূরে পুলিশের গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এএসআই সমীর চট্টোপাধ্যায় অন্য পুলিশকর্মীদের নিয়ে তাঁকে উদ্ধারে যান। তখন শেখ ফিরোজের বাড়ির দিক থেকে ইট-পাটকেল ছোড়া হতে থাকে বলে অভিযোগ। বিএলএলআরও কর্মী-আধিকারিকদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখানো লোকজন তখন পাল্টা ইট ছুড়তে শুরু করেন। আশপাশের বাসিন্দারা জানান, এর জেরে কিছুক্ষণের জন্য রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শেখ ফিরোজের সঙ্গে তাঁর এক সময়ের সঙ্গী শেখ দিলদারের বেশ কিছু দিন ধরে বিবাদ চলছে। এর আগেও ইটভাটা নিয়ে বিবাদে গোলমাল বেধেছে। তৃণমূল নেতা নীলু চক্রবর্তীর দাবি, “জবরদখল জমি দখলমুক্ত করার জন্য আমরা দাবি জানিয়ে আসছি। সে জন্য আমাকে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এ দিন শেখ ফিরোজের লোকজন ইট-পাটকেল ছুড়ছিল। আমরা বিএলএলআরও কর্মী-আধিকারিকদের বাঁচিয়েছি।” শেখ ফিরোজের পাল্টা দাবি, “আমরা বৈধ নথিপত্র দেখানোয় সরকারি কর্মীরা ফিরে যাচ্ছিলেন। তখন কিছু লোকজন তাঁদের উপরে চড়াও হয়। আমাদের দিক থেকে কোনও হামলা হয়নি।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনা নিয়ে জয়দীপবাবু একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। জয়দীপবাবু অবশ্য এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি। তবে বিএলএলআরও দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে জমিতে পাঁচিল দেওয়া রয়েছে, তার কিছুটা খাস ও কিছুটা ব্যক্তিগত। এ দিন খাস জমি পুনরুদ্ধারের কাজে গিয়েছিলেন কর্মীরা। কিন্তু আদালতের নথি দেখানোয় এ দিনের মতো ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। তখনই বাইরের কিছু লোক চড়াও হয়।

পুলিশকর্তারা ঘটনাস্থলে বড় বাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এই ঘটনায় এএসআই সমীরবাবু, এক কনস্টেবল বিটসুন্দর দরিপা ছাড়াও বিবাদমান দু’পক্ষের সাত জন জখম হযেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এডিসিপি (সেন্ট্রাল) জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় বাকি জড়িতদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement