নদিয়ার ভক্তবালা বিএড কলেজে টাকা নিয়ে ছাত্র-ভর্তিতে অভিযুক্ত নেতা তন্ময় আচার্যকে সাসপেন্ড করেছে টিএমসিপি। ঠিক তার পরের দিনই ফের টাকা নিয়ে অযোগ্য ছাত্রছাত্রীদের কলেজে ভর্তি করার অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরে।
ফারাকের মধ্যে, এ বার আর কোনও বেসরকারি কলেজ নয়। দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজে অনার্স ও পাস কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছে এসএফআই। শুধু টিএমসিপি নয়, অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষ, তিন অশিক্ষক কর্মচারী, এমনকী এক পুলিশ অফিসারের নামেও। দুর্গাপুরের মাইকেল মধুসূদন মেমোরিয়াল কলেজেও ভর্তি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ।
শুক্রবার দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্তের কাছে ওই লিখিত অভিযোগ জমা দেয় এসএফআই। তাদের অভিযোগ, ছাত্র সংসদের নাম করে টিএমসিপি নেতারা কলেজগুলিকে ‘তোলাবাজির মুক্তাঞ্চল’ করে তুলেছে। গত ২৮ জুলাই সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বি এ, বি এসসি, বি কম পাসকোর্সে ৬০ জন ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি নেওয়া হয়। অধ্যক্ষ এবং তিন অশিক্ষক কর্মচারী ছাড়াও নিউ টাউনশিপ থানার ওসি সেখানে হাজির ছিলেন। একই ভাবে গত ২১ এবং ২৭ জুলাই রাতে অনার্স কোর্সেও যথাক্রমে ৩১ ও ২৭ জন ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, অনার্সের আসন ২০ হাজার টাকায় এবং পাসের আসন ৮-১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এসএফআইয়ের বর্ধমান জেলা যুগ্ম সম্পাদক সৌমেন কিস্কুর বক্তব্য, “কিছু ছাত্রছাত্রী আমাদের বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের নিরাপত্তার স্বার্থে এখনই কারও নাম প্রকাশ্যে বলছি না।” তাঁদের দাবি
১) কোন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী রাতে ভর্তি প্রক্রিয়া চালানো হল, তা জানাতে হবে।
২) প্রথমে যাঁরা ভর্তি হয়েছেন এবং পরে যাঁদের রাতের অন্ধকারে ভর্তি নেওয়া হয়েছে, দু’দলেরই নাম এবং প্রাপ্ত নম্বরের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
৩) এই ভর্তিকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে ফাঁকা আসনে ফের মেধাতালিকা অনুযায়ী ভর্তি নিতে হবে।
মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ওই দাবিপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”
গোটা ঘটনায় জড়িত ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানানোর পাশাপাশি অধ্যক্ষ এবং অশিক্ষক কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলেছেন সৌমেনরা। কলেজের অধ্যক্ষ অচিন্ত্য পাল কোনও মন্তব্য করতে চাননি। টিএমসিপি নেতা অশোক রুদ্র বলেন, “অবাস্তব অভিযোগ এনে লাভ হবে না।”