খনি সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণ নিয়ে সালানপুরের মোহনপুর কোলিয়ারি লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করল ইসিএল। ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। তবে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, মোহনপুর খোলামুখ খনিতে সঞ্চিত কয়লা শেষ হতে চলেছে। কোলিয়ারির কাজ চালু রাখতে গেলে আশপাশের এলাকায় খনন করতে হবে। ওই সব এলাকায় ২৫ বছর ধরে ব্যবহার করার মতো কয়লা মজুত আছে। কিন্তু তা করতে গেলে কয়েকশো একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। কোলিয়ারি লাগোয়া পর্বতপুর, পাহাড়পুর ও মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে সে ব্যাপারে আবেদন করেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। নির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ পেলে জমি দেওয়ার ব্যাপারে রাজিও হয়ে যান অনেক গ্রামবাসী। বিশেষ করে মোহনপুরের বাসিন্দারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোলিয়ারি লাগোয়া এলাকায় দূষণের প্রকোপ ও মাঝে-মধ্যেই ঘর-বাড়িতে ফাটল ধরার কারণে মোহনপুরের মানুষজন জমি দিতে নারাজ নন।
কিন্তু এর পরেও কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, শাসকদলের কিছু লোকজন জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেছে। তাঁদের দাবি, ওই এলাকায় ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এমন কিছু পরিবার বাস করছে, যাদের কাছে জমির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র নেই। তাঁদের পুনর্বাসন বা ক্ষতিপূরণের বিষয়ে ইসিএল কর্তৃপক্ষ স্থির সিদ্ধান্ত না নিলে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করতে দেওয়া হবে না বলে দাবি তোলে স্থানীয় তৃণমূলের একাংশ। বুধবার তাই গ্রামবাসী ও তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, মোহনপুর কোলিয়ারি সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজন প্রায় ১৯৬ একর জমি। সেই জমি চিহ্নিতও করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ বাবদ জমি মালিকেরা সালানপুর এরিয়া কার্যালয়ের কাছে ৫ কাঠা করে জমি চেয়েছেন। এ ছাড়া প্রতি ২ একর জমি পিছু ১৫ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন। তবে ইসিএলের তরফে গ্রামবাসীদের জানানো হয়েছে, ২ একর জমি পিছু তাঁরা ১২ লক্ষ টাকা দেবেন। এ ছাড়া সালানপুরের দাসকেয়ারি ও গড়পট্টাবরে উন্নত পরিকাঠামোযুক্ত কলোনি গড়ে দেওয়া হবে। সেখানে জমিদাতা পরিবার পিছু ১০০ বর্গমিটারের বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হবে।
এ দিন বৈঠকে স্থানীয় তৃণমূল নেতা পাপ্পু উপাধ্যায় দাবি করেন, সেখানে প্রায় ৪৭টি পরিবার রয়েছেন, যাঁদের জমির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজ নেই। তাঁদেরও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। পাপ্পুবাবু বলেন, “আমরাও চাই কোলিয়ারি বাড়ুক। কিন্তু তা করতে হবে বাস্তুহারাদের পুনর্বাসন দিয়ে।” তিনি জানান, এ বিষয়ে স্থির সিদ্ধান্ত না হলে জমি অধিগ্রহণে সম্মতি দেওয়া হবে না।
ইসিএলের সালানপুর এরিয়ার জিএম অজয়কুমার সিংহ অবশ্য বলেন, “আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। গ্রামবাসীরা আমাদের জমি দিতে রাজি হয়েছেন।” তিনি জানান, আগামী সাত দিন জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত কিছু কাজকর্ম হবে। তার পরে মহকুমা প্রশাসনের উপস্থিতিতে ফের গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।