উৎসব নিয়েও দ্বন্দ্ব শাসকদলে

পর্যটন উৎসবের পাল্টা এ বার পিঠে-পুলি উৎসব। এত দিন কালনা শহরে মিটিং মিছিলে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলের ছাপ পড়ছিল। সব মিছিলে দেখা যেত না শহরের সব নেতাদের। শহরবাসীরাই বলতেন, নেতার থেকে বেশি কার্যালয় এখন শহরে। এ বার সেই কোন্দল শুরু উৎসবেও। সম্প্রতি শেষ হওয়া পর্যটন উৎসবে যে সমস্ত নেতাদের দেখা মেলেনি তাঁরাই এ বার পাল্টা পিঠে ও খাদ্য উৎসবের আয়োজন করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:০৭
Share:

অঘোরনাথ পার্কে চলছে প্রস্তুতি।

পর্যটন উৎসবের পাল্টা এ বার পিঠে-পুলি উৎসব।

Advertisement

এত দিন কালনা শহরে মিটিং মিছিলে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলের ছাপ পড়ছিল। সব মিছিলে দেখা যেত না শহরের সব নেতাদের। শহরবাসীরাই বলতেন, নেতার থেকে বেশি কার্যালয় এখন শহরে। এ বার সেই কোন্দল শুরু উৎসবেও। সম্প্রতি শেষ হওয়া পর্যটন উৎসবে যে সমস্ত নেতাদের দেখা মেলেনি তাঁরাই এ বার পাল্টা পিঠে ও খাদ্য উৎসবের আয়োজন করেছেন।

পর্যটনের প্রচার এবং প্রসারের উদ্দেশ্যে শুরু হওয়া পর্যটন উৎসবের মূল উদ্যোক্তা হলেন পুরপ্রধান তথা কালনার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। তৃণমূল সূত্রের খবর, পর্যটন উৎসবে আমন্ত্রিত না হওয়ায় শহরের বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। তারপরেই বিধায়ক বিরোধী ছোট ছোট গোষ্ঠীগুলি এক হয়ে এই উৎসবের আয়োজন করে। তবে সামনেই যেহতু পুরভোট, পুরপ্রধান বিরোধী গোষ্ঠীরা জোট বাধায় অন্য ইঙ্গিতও মিলছে। শহরের এক তৃণমূল নেতা গোরাবাবু তো বলেই ফেললেন, “আমি পর্যটন উৎসবে আমন্ত্রিত ছিলাম না। পিঠে ও খাদ্য উৎসব কমিটি আমায় সম্মান দিয়েছে। তাই অনুষ্ঠানে শুরু থেকেই রয়েছি।”

Advertisement

পিঠে-পুলি ও খাদ্য উৎসবের প্রচারের জন্য যে লিফলেট বিলি করা হয়েছে সেখানে সহযোগিতায় নাম রয়েছে মদন পোদ্দার, গোরা পাঠক, সোমনাথ পণ্ডিত, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় এবং স্বপন দত্তের মতো তৃণমূল নেতাদের। এঁদের কাউকেই পর্যটন উৎসব চলাকালীন মঞ্চের আশপাশে দেখা যায় নি। ফলে উৎসব ঘিরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দাবি রয়েই যাচ্ছে।

যদিও সরাসরি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি তৃণমূল নেতারা। পিঠে ও খাদ্য উৎসবের সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, “কে, কোথায় কি উৎসব করছে তা নিয়ে আমাদের কোনও আগ্রহ নেই। গত বার আমরা পিঠে-পুলি উৎসব করে অভূতপূর্ব সারা পেয়েছিলাম। এ বার তাই উৎসবের কলেবর বৃদ্ধি করা হয়েছে।” তাঁর দাবি, অনুষ্ঠান কোনও ভাবেই দল পরিচালিত নয়। কিন্তু তাহলে ফেস্টুনে দলীয় নেতাদের নাম কেন? ১৭ নম্বরের কাউন্সিলার দেবপ্রসাদবাবুর দাবি, “ওঁরা শুধু রাজনীতির লোকই নন। সারা বছর বিভিন্ন সমাজসেবার সঙ্গেও যুক্ত থাকেন। তাই নাম রয়েছে।” আর পুরপ্রধান বিশ্বজিৎবাবুর কথায়, “মানুষ উৎসব ভালবাসেন। শহরে যদি আর একটা উৎসব হয় তাতে সাধারন মানুষেরই ভাল। এর সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই।” তাঁর দাবি, পর্যটন উৎসবে কাউন্সিলার-সহ সরকারি পধাধিকারিদের আমন্ত্রন জানানো হয়েছিল।

নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েন নি বিজেপির বর্ধমান পূর্ব সভাপতি রাজীব ভৌমিক। তিনি বলেন, “তৃণমূল নেতারা নিজেদের স্বার্থ ছাড়া অন্য কিছু চায় না। এ কথা মানুষের অজানা নয়। শহরে উৎসবকে ঘিরে যা হচ্ছে তা সাধারন মানুষ দেখছেন। সামনে পুরভোট। মানুষ ঠিক জবাব দেবেন।” সিপিএমের কালনা জোনাল কমিটির সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, “উৎসবকে ঘিরে শহরে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব একেবারে সামনে চলে এসেছে। মানুষ যথাসময়ে এর জবাব দেবেন।”

আজ, বৃহস্পতিবার অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামে শুরু হতে চলেছে পিঠে ও খাদ্য উৎসব। উদ্যোক্তাদের দাবি, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ শতব্দী রায়। উৎসব কমিটির দাবি, ৪৫ রকমের খাবার থাকবে ওই উৎসবে। গায়ক ও টিভি সিরিয়ালের নায়কেরাও হাজির থাকবেন। এ ছাড়া বিনামূল্যে নাগরদোলা এবং শিশুদের জন্য বেবি ট্যাক্সির ব্যবস্থ্যা রাখা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement