অনুষ্ঠানে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও আসানসোলের বিধায়ক মলয় ঘটক।—নিজস্ব চিত্র।
অনুদান দিয়ে কর্তব্য সারা নয়, সামনের বছর থেকে চুরুলিয়ায় কবি নজরুল ইসলামের জন্মদিবসের অনুষ্ঠান করবে রাজ্য সরকার। বিদ্রোহী কবির জন্মভিটেয় এসে এমনটাই জানালেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
প্রতি বছরের মতো এ বারও নজরুলের জন্মদিনে চুরুলিয়ায় শুরু হল মেলা ও অনুষ্ঠান। সোমবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মন্ত্রী সুব্রতবাবু। এই অনুষ্ঠানের জন্য আগে রাজ্য সরকারের অনুদান দিলেও গত দু’বছর ধরে তা আর মিলছে না বলে অভিযোগ আয়োজক চুরুলিয়ার নজরুল অ্যাকাডেমি। সে প্রসঙ্গে এ দিন মন্ত্রী বলেন, “সামনের বছর থেকে পুরো অনুষ্ঠানই করবে রাজ্য সরকার।” কবি নজরুলের ভাইপো মাজাহার হোসেন বলেন, “খুব ভাল প্রস্তাব। আমরা সাদরে অভ্যর্থনা জানাচ্ছি। এমন যদি হয় তবে চুরুলিয়ার গুরুত্ব প্রতিষ্ঠা পাবে।”
এ দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী সুব্রতবাবু ছাড়াও ছিলেন আসানসোলের বিধায়ক মলয় ঘটক, আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল প্রমুখ। সুব্রতবাবু বলেন, “আজ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এখানে এসেছি। এখানে আসার আগে আমি খুবই আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি। কারণ, এর আগে ১৯৭২ সালে যখন তথ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখনও আমাকে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে নজরুলের কাছে পাঠানো হয়েছিল। আমি তাঁকে মালা দিয়েছিলাম।” তিনি আরও বলেন, “কাজী নজরুল আমাদের গর্বের। কিন্তু এই এলাকা এখনও যে এমন অনুন্নত, তা আমাদের কাছে দুঃখের এবং অনুতাপের। যে ভাবে অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে এখানে আসতে হচ্ছে, তাতে অনেক না পাওয়ার যন্ত্রণা মনে পড়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন, কবির জন্মভিটে শান্তিনিকেতনের মতো চেহারা দেবেন।”
এ দিন সুব্রতবাবু কবির জন্মভিটেয় দাঁড়িয়ে বলেন, “নজরুল লিখেছিলেন, একই বৃন্তে দু’টি কুসুম, হিন্দু মুসলমান। আমার মনে হয়, আসলে এটির মানে, একই বৃন্তে দু’টি ফুল, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল।” মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে এখানে দেখতে পাঠিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এখানে একটি পাঠাগার রয়েছে। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। আমি এ কথা গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব। মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, নজরুলের জন্য যথেষ্ট কিছু করা হয়নি। আমরা সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি।”