বর্ধমান থানায় আটক করা টোটো।—নিজস্ব চিত্র।
অভিযান চালিয়ে ১৭টি বেআইনি টোটো আটক করল পুলিশ। শহরের যানজট কমাতে এই অভিযান চালানো হয় বলে পুলিশ ও পুরসভা জানিয়েছে।
এই অভিযানের জেরে এ দিন শহরে টোটো চলেছে খুব কম। স্টেশন থেকে জিটি রোডের ভিতর টোটো প্রায় চলাচল করতে দেখা যায়নি। পুলিশ অভিযানের সময়ে পুরসভা অনুমোদিত ১০টি টোটো আটক করলে সেগুলির মালিকেরা থানায় বিক্ষোভ দেখান। এক টোটো চালক অভিজিত পাল বলেন, “আমাদের যে পুরসভা অনুমোদন দিয়েছে তার কাগজপত্র আমাদের কাছে রয়েছে। তাই আমরা পুলিশের অনুমোদিত টোটো আটকের বিরুদ্ধে থানায় প্রতিবাদ জানিয়েছি।” পুলিশ অবশ্য ওই টোটোগুলি ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু তিনকোনিয়া বাসস্টান্ডে আটকে রাখা টোটোগুলি ছাড়া হয়নি। বর্ধমান থানা জানায়, অনুমোদিত টোটোর পরিসংখ্যান জোগাড় করা হবে। ভবিষ্যতে সেগুলি আটক করা হবে না।
এক টোটো মালিক তাপস কর্মকার বলেন, “শহরের বহু বেকার যুবক কিছু টোটো অর্থনৈতিক কারণে কিনে চালাচ্ছে। তাদের যদি বৈধ অনুমোদন পুরসভা দেয়, এত বড় শহরে তাতে যানজট সমস্যা দেখা দেবে না। কিন্তেু শহর লাগোয়া পঞ্চায়েত এলাকা থেকে আসা প্রচুর টোটোর জন্য যানজট দেখা গিয়েছে।” অনুমোদনহীন টোটো মালিকদের দাবি, চালকদের ভোটার কার্ড ইত্যাদি নথি দেখে শহরের বাসিন্দাদের ওই টোটোগুলি চালাতে দেওয়া হোক।
শুক্রবার বর্ধমান সদর ইকো-রিকশা চালক ইউনিয়নের তরফে বর্ধমান স্টেশনে একটি শিবির করে গণসাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছিল ওই টোটোগুলি চলতে দেওয়ার দাবিতে। তাতে প্রায় আট হাজার মানুষ সাক্ষর করেন। ওই ইউনিয়নের দাবি, রবিবার অনুমোদনহীন টোটো আটক বন্ধ করতে তাঁরা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করে কলকাতায় গিয়েছিলেন। তবে তার পরে কী হয়েছে, তা অবশ্য বলতে চায়নি তারা।
বর্ধমান টাউন সার্ভিস বাস ওনার্স সমিতির সম্পাদক নবকুমার আইচ জানান, সমিতির তরফে হাইকোর্টে অবৈধ টোটো চলাচলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। শহর জুড়ে টোটো চলায় যানজটের সমস্যার পাশাপাশি টাউন সার্ভিস বাসে যাত্রীর অভাবে লোকসান হচ্ছে।
বর্ধমানের পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত বলেন, “অনুমোদন না থাকা টোটোগুলি স্বচ্ছন্দে শহরের ভিতরের রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারে। কিন্তু তারা জিটি রোডে উঠলে পুলিশ আটক করবে।”
বর্ধমান থানার আইসি আব্দুল গফ্ফর বলেন, “আমরা পরিবহণ দফতর ও পুরসভার নির্দেশে অনুমোদনহীন টোটোর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছি। অনুমোদনহীন মোট ১৭টি টোটো আটক করা হয়েছে। ওই টোটোগুলি আটকে রাখা হবে না ছেড়ে দেওয়া হবে, সে সিদ্ধান্ত ওই দুই দফতরকে নিতে হবে।”