জল প্রকল্পের পাইপ পাতা নিয়ে রেলের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছে পুরসভা। বার্নপুরে রেললাইন লাগোয়া এলাকায় তাদের অনুমতি না নিয়েই পাইপ পাতা হচ্ছিল বলে অভিযোগ রেল কর্তৃপক্ষের। প্রাথমিক ভাবে ভুল স্বীকার করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। রেলের কাছে অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও পুরসভা সূত্রে খবর।
আসানসোল পুরসভার উদ্যোগে সম্প্রতি একটি জলপ্রকল্প শুরু হয়েছে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে বার্নপুরের ভুতাবাড়িতে। দু’কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন আশপাশের পাঁচ গ্রামের বাসিন্দারা। এই গ্রামগুলিতে জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য পাইপলাইন পাতার কাজ চলছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সামডিহির কাছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের একটি লাইন লাগোয়া এলাকা দিয়ে এই পাইপ নিয়ে যেতে হবে। দিন কয়েক আগে সেই কাজ করছিল নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা। তখন আরপিএফ বাধা দেয়। পুরসভার জল দফতরের মেয়র পারিষদ রবিউল ইসলাম জানান, তখনকার মতো কাজ বন্ধ করা হয়। চলতি সপ্তাহের শুরুতে সেই কাজে ফের হাত দেন ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা। খবর পেয়ে পৌঁছন আরপিএফ কর্মীরা। জনা সাতেক ঠিকাকর্মীকে আটক করেন তাঁরা। ঘণ্টাখানেক পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
কেন ওই ঠিকাকর্মীদের আটক করা হয়েছিল, সে প্রশ্নে আদ্রা ডিভিশনের সংশ্লিষ্ট দফতরের এক অফিসার জানান, রেললাইন লাগোয়া এলাকায় পাইপলাইন পাতার জন্য পুরসভা কোনও অনুমতি নেয়নি। পুরসভার জল দফতরের মেয়র পারিষদ রবিউল ইসলাম বলেন, “ওখানে আমরা পাইপ লাইন মেরামতির কাজ করছিলাম। তার জন্য যে আগাম অনুমতি নিতে হবে জানতাম না। তবে পুরসভার তরফে আদ্রা ডিভিশনের কাছে অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।”
আসানসোল পুরসভার উদ্যোগে জলের পাইপলাইন পাতা নিয়ে রেল যে পদক্ষেপ করেছে, সে ব্যাপারে বিশেষ কিছু জানাতে চাননি আদ্রা ডিভিশনের সিনিয়র ডিসিএম বিজয়কুমার মাজি। তবে তিনি বলেন, “রেলের জমিতে কোনও কিছু করতে হলে অবশ্যই আগাম অনুমতি নিতে হবে। এ ক্ষেত্রেও অনুমতি নেওয়া উচিত ছিল।” প্রকল্পের মাঝপথে এই ধরনের বাধা আসায় তাঁরা কোনও পদক্ষেপ করবেন কি না, সে ব্যাপারে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ লক্ষ্মণ ঠাকুর বলেন, “আরপিএফ কর্মীরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পালন করেছেন। আমাদের কিছু বলার নেই।”
আসানসোলে বড় সমস্যা জল। সেখানে এরকম একটি প্রকল্পের কাজ করার সময়ে অনুমতি নেওয়ার বিষয়টি ভাবা হল না কেন, সে প্রশ্নের সদুত্তর পুর কর্তৃপক্ষের কাছে মেলেনি। ডেপুটি মেয়র অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, এটি কোনও সমস্যা নয়। সব ঠিক হয়ে যাবে।