আদালতের পথে ধৃতেরা।—নিজস্ব চিত্র।
বেসরকারি কারখানার ঠিকাকর্মীকে খুনের ঘটনায় তাঁর দুই সহকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে এক জন নিহতের পাশের বাড়ির বাসিন্দা। পুলিশ জানায়, তদন্তে জানা গিয়েছে, নানা বিষয় নিয়ে বিবাদের জেরেই এই খুন।
বৃহস্পতিবার সকালে দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার করঙ্গপাড়া এলাকায় উৎপল বাউড়ি নামে বছর ত্রিশের ওই যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। তিনি সোমবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়। তবে কী কারণে এই খুন, পুলিশ তখন কোনও সূত্র পায়নি। তদন্তের জন্য কুকুরও আনে পুলিশ। তবে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, উৎপলবাবুকে খুন করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, নানা সূত্র থেকে মেলা তথ্যের ভিত্তিতে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মিঠুন বাউড়ি ও সন্তোষ দাস নামে উৎপলবাবুর দুই সহকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার বাড়ি থেকেই ধরা হয় তাদের। মিঠুনের বাড়ি উৎপলবাবুর বাড়ির পাশেই। পুলিশ জানায়, তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, দুই বাড়ির মধ্যে পাঁচিল দেওয়া নিয়ে দীর্ঘদিনের বিবাদ ছিল। এ নিয়ে দু’পক্ষ বারবার গণ্ডগোলেও জড়িয়েছে। তদন্তে পুলিশ আরও জেনেছে, উৎপল, মিঠুন, সন্তোষের মতো ঠিকাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে একটি ফান্ড চালাতেন। প্রতি মাসে সেই ফান্ডে টাকা দিতে হত সকলকে। কিন্তু, উৎপলবাবু প্রায়ই কম টাকা দিতেন বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে, এ নিয়ে কেউ কিছু বললে উৎপলবাবু চোটপাট করতেন। মিঠুন সে নিয়েও ক্ষুব্ধ ছিল। ওই কারখানায় তিন মহিলাকে ঠিকা শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করা নিয়েও ধৃতদের সঙ্গে নিহত কর্মীর গোলমাল বেধেছিল বলে পুলিশ জেনেছে।
আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ জানান, এই সব নানা কারণে উৎপলবাবুকে খুনের পরিকল্পনা আঁটে ধৃতেরা। ঘটনার দিন তাঁকে করঙ্গপাড়ার একটি মাঠে নিয়ে যায় মিঠুন ও সন্তোষ। সেখানে মদ্যপানের পরে পেটে ছুরি চালিয়ে তাঁকে খুন করে পাঁচিল ঘেরা জঙ্গলে দেহ ফেলে পালিয়ে যায় বলে তদন্তে জেনেছে পুলিশ। রবিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে ১০ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না তা জানার চেষ্টা চলছে।’’