ফাইল চিত্র।
বছর পাঁচেক আগেও যৌথ ভাবে পুরবোর্ডে ক্ষমতায় ছিল তারা। কিন্তু গত কয়েক বছরে শহরে তাদের বিশেষ কোনও কর্মসূচিই দেখা যায়নি। দাঁইহাটে এ বার আসন্ন পুরসভা ভোটে কংগ্রেস সব আসনে প্রার্থী দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে দলেরই অনেক নেতা-কর্মী। শহরে দলের এমন পরিস্থিতির জন্য শাসকদলের ‘সন্ত্রাস’ দায়ী, দাবি কংগ্রেস নেতৃত্বের।
১৪ ওয়ার্ডের দাঁইহাট পুরসভায় ২০০৫ সাল পর্যন্ত মূলত লড়াই হত বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে। ১৯৯৫ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত পুরবোর্ড কংগ্রেসের দখলে ছিল। ২০০৫ সালে তা ছিনিয়ে নেয় সিপিএম। ২০১০-এ কংগ্রেস ও তৃণমূল শহরে জোট করে লড়াইয়ে নেমে পুরভোটে জয়ী হয়। তবে তার পর থেকেই ধীরে-ধীরে শক্তিক্ষয় হয়েছে কংগ্রেসের। ২০১৫ সালের পুরভোটে মাত্র একটি আসন পায় তারা। বোর্ড গড়ে সিপিএম। পরে অবশ্য সিপিএমের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে অপসারিত করে বোর্ডের দখল নেয় তৃণমূল।
২০১৫ সালের মে মাসে কাটোয়ার বিধায়র রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। কংগ্রেস সূত্রে জানা যায়, তার পরে দাঁইহাটেও তাদের নেতা-কর্মীদের অনেকে শাসক দলে নাম লেখাতে শুরু করেন। শহরে দলের অস্তিত্ব কার্যত সঙ্কটে পড়ে, জানান কংগ্রেস নেতারা। এই পরিস্থিতিতে এলাকায় দীর্ঘদিন কংগ্রেসের কোনও কর্মসূচিও দেখা যায়নি বলে দাবি বাসিন্দাদের বড় অংশের।
এই অবস্থার কথা স্বীকার করে কাটোয়া মহকুমা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি পার্থবরণ রক্ষিতের অভিযোগ, ‘‘সাংগঠনিক দুর্বলতার জন্য আমরা গত তিন বছর দাঁইহাটে কোনও কর্মসূচি পালন করতে পারিনি। তবে এর কারণ হচ্ছে শাসক দলের সন্ত্রাস। আমাদের এক কর্মী দাঁইহাট পুরসভায় চাকরি করেন বলে তাঁকেও জোর করে দলত্যাগ করতে বাধ্য করানো হয়েছে।’’
কংগ্রেসের অভিযোগ মানতে চাননি দাঁইহাটের তৃণমূল নেতা তথা পুরপ্রধান শিশির মণ্ডল। তাঁর পাল্টা দাবি, নিজেদের সাংগঠিক দুর্বলতা আড়াল করতে এমন অভিযোগ তুলছেন কংগ্রেস নেতারা। তিনি আরও বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথবাবু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে, দাঁইহাটে কংগ্রেস প্রায় উঠে গিয়েছে। আগামী পুরভোটে ওরা প্রার্থী দিতে পারবে না বলে মনে হয় না।’’
যদিও পার্থবরণবাবু দাবি করেন, ‘‘দাঁইহাটের মানুষ কংগ্রেসের সঙ্গেই রয়েছেন। পুরভোটে তৃণমূলের ভয়ে হয়তো অনেকে প্রার্থী হতে চাইবেন না। তবে অর্ধেকের বেশি আসনে প্রার্থী দেব আমরা।’’