রাস্তায় মোটরবাইকের ঢল। সোমবার বর্ধমানে। নিজস্ব চিত্র
সপ্তাহ পেরিয়ে গেল ‘আনলক ১’। সোমবার আগের তুলনায় বেশি বাস রাস্তায় নামলেও যাত্রীর বিশেষ দেখা মেলেনি, এমনই অভিযোগ পূর্ব বর্ধমান জেলা বাস মালিক সমিতির। বর্ধমান, মেমারি-সহ বিভিন্ন এলাকার বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, এক-একটি বাসে ১০-১২ জন করে যাত্রী রয়েছেন। তবে তুলনামূলক ভাবে শহরের ভিতরে চলা মিনিবাসগুলিতে যাত্রী বেশি ছিল। কলকাতা যাওয়ার সরকারি বাসেও ভিড় ছিল। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, সরকারি বাস পেতে সমস্যা হয়েছে।
এ দিন বর্ধমান শহরের দু’টি বাসস্ট্যান্ড, নবাবহাট ও উল্লাসে গিয়ে দেখা যায়, লাইন দিয়ে বেসরকারি বাস দাঁড়িয়ে রয়েছে। সামনে আড্ডা দিচ্ছেন কর্মীরা। দু’একটি বাসে পাঁচ-সাত জন করে যাত্রী রয়েছেন। কর্মীদের দাবি, স্ট্যান্ড থেকে সকালে কিছু লোক উঠছেন। তা-ও গড়ে জনা বারো করে। দুপুরে সেই সংখ্যা জানে পাঁচেকে নেমে আসছে। রাস্তায় কোনও যাত্রী মিলছে না। বর্ধমান শহরে আসার জন্যও যাত্রী মিলছে না। স্ট্যান্ড থেকে যাত্রী মেলেনি বলে বাঁকুড়া, হুগলি, কাটোয়া রুটের বেশ কয়েকটি বাস এক বারের বেশি চালানো যায়নি বলে জানান কর্মীরা।
বাসে যাত্রী না থাকলেও অবশ্য রাস্তায় ভিড় দেখা যায়। বর্ধমান-বাঁকুড়া রোডের তেলিপুকুর মোড়ে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, প্রচুর মোটরবাইকের লাইন। সেখানে দাঁড়িয়ে মাধবডিহির সুশান্ত দাস, রায়নার আমিনুল হকেরা বলেন, ‘‘আমরা সাধারণত বাসে যাতায়াত করি। কিন্তু বাস নেই বলে মোটরবাইকে যাতায়াত করছি। আমাদের মতো অনেকেই বর্ধমানে আসা-যাওয়ায় মোটরবাইকেই ভরসা রাখছেন।’’ অনেকে আবার ছোট যাত্রিবাহী গাড়িতে অফিস-কাছারি যাতায়াত করছেন বলে জানান। জেলাশাসকের দফতরের এক কর্মীর কথায়, ‘‘কয়েকজন মিলে যাত্রিবাহী গাড়িতে যাতায়াত করছি। আট-ন’জন এক সঙ্গে যাতায়াত করায় ভাড়াও বিশেষ গায়ে লাগছে না।’’ অনেকে দাবি করেন, বাস চললেও তাতে অনেক যাত্রী উঠবেন, এমনটা মনে করে যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাচ্ছেন।
বর্ধমান জেলা বাস মালিক সমিতির দাবি, জেলায় হাজারখানেক বাস চলে। তার মধ্যে সোমবার প্রায় ৭০ শতাংশ বাস রাস্তায় নেমেছিল। কিন্তু যাত্রী ছিল না। ওই সমিতির যুগ্ম সম্পাদক তুষার ঘোষের দাবি, ‘‘প্রশাসনের কথায় বাস নেমেছে। কিন্তু বাস মালিকদের গড়ে তিন-সাড়ে তিন হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে। এ ভাবে কত দিন পারা যাবে, জানি না।’’ তবে বর্ধমান শহরে মিনিবাসে যাত্রী বেড়েছে বলে লোকসান কমেছে বলে দাবি করেছে একটি সংগঠন। ওই সংগঠনের নেতা বাবলু শর্মার দাবি, ‘‘আগে দু’আড়াই হাজার টাকা লোকসান হচ্ছিল। সোমবার গড়ে হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। কিছু যাত্রী বেড়েছে। আশা করছি, দু’-এক দিনের মধ্যে আরও যাত্রী বাড়বে।’’