বাড়িতে চাহিদা মতো জল না পাওয়ার সমস্যা গুসকরায় বহুদিনের। তার উপর শীত পড়তেই জলের টান আরও বেড়েছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। নলকূপ থেকেও জল মিলছে কম। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভায় বারবার জানিয়েও স্থায়ী সমাধান মেলেনি। যদিও পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায়ের আশ্বাস, শীঘ্রই নতুন পাইপ লাইন পাতার কাজ শুরু হবে।
১৬ ওয়ার্ডের এই পুরসভায় প্রায় সাড়ে সাত হাজার পরিবারের বাস। তার মধ্যে তিনটি ট্যাঙ্কের মাধ্যমে ১৮৬৪টি পরিবারে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। পুরসভা সূত্রে জানা যায়, তিনটি ট্যাঙ্ক মিলে সাড়ে ছ’লক্ষ লিটার জল ধরে। এ ছাড়াও গুসকরা হাটতলা এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের একটি ৬৫ হাজার লিটারের ট্যাঙ্ক রয়েছে। সেখান থেকেও জল যায় কিছু এলাকায়। তারপরেও বেশ কিছু ওয়ার্ডে জলের সমস্যা রয়ে গিয়েছে। পুরসভার ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ছে কমলনগর, ধরমপুর, কেলেটি, কাঁটাটিকুরি, পুন্নগর এলাকা। ধরমপুরের বাসিন্দা তপন পাল, সোমা লোহারদের অভিযোগ, এলাকায় প্রায় দেড়শোটি পরিবার থাকলেও নলকূপ রয়েছে চারটি। সেগুলি খারাপ হয়ে গেলে ভরসা অন্য গ্রাম। জলের সমস্যা রয়েছে ৭, ১০, ১১, ১৫ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডেও।
বিরোধী দলনেতা মনোজ সাউয়ের অভিযোগ, জলের সমস্যা নিয়ে বোর্ডের প্রতিটি বৈঠকে আলোচনা হয়, কিন্তু কাজের কাজ হয় না। তাঁর দাবি, বাম বোর্ড থাকাকালীন কেন্দ্র সরকারের জহরলাল নেহরু আরবান রিনিউয়াল মিশন প্রকল্পে সাড়ে ৮ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছিল। তা দিয়েই যেটুকু কাজ হওয়ার হয়েছে। পুরসভার অনেক বাসিন্দা পাইপ লাইনের জন্য আবেদন জানাতে এলেও পুরসভা থেকে তা নেওয়া হচ্ছে না বলেও তাঁর অভিযোগ। পুরসভার জল বিষক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের যদিও দাবি, ‘‘যেখানে পাইপ লাইন নেই, সেখানে জলের সংযোগ দেওয়ার আবেদন নিয়ে কী লাভ?’’ তবে যেখানে সুবিধা আছে, সেখান থেকে আবেদন এলে দু’দিনের মধ্যে সংযোগ দেওয়া হবে বলেও তাঁর দাবি। মৃত্যুঞ্জয়বাবুর ওয়ার্ডেই এখনও জলের সংযোগ পৌঁছয়নি। ওই ওয়ার্ডের প্রমীলা মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘নলকূপের জলেই খাওয়া, স্নান, বাড়ির সব কাজ করতে হয়। তাও বেশি জল ওঠে না। গরিব এলাকায় প্রশাসন পাশে না থাকলে মুশকিল।’’
কাউন্সিলররাও মেনে নিয়েছেন, তিন বছর ধরে বোর্ডে থেকেও জল-সমস্যা মেটাতে পারেননি তাঁরা। পুরপ্রধানের আশ্বাস, শীঘ্রই পাইপ লাইন পেতে সমস্যা মেটানো হবে।