চিন্তা পুর-প্রশাসনেও

জল কই, হাপিত্যেশ বাসিন্দাদের

কলসি, বালতির লাইনটা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। পুরসভার পাঠানো একটামাত্র ট্যাঙ্কার থেকে জল কখন মিলবে, তার প্রতীক্ষায় ঠায় দাঁড়িয়ে প্রায় জনা পঞ্চাশ বাসিন্দা।গরমের দাবদাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিল্পাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এই ছবিটাই দেখা যাচ্ছে। তার উপরে জলাধারগুলির জলস্তর কমতে থাকায় কপালে ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনের কর্তাদেরও। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে গোটা গরমকাল জুড়ে জল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যাবে কি না, তা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৬ ০১:২০
Share:

আসানসোলে জল ভরার লাইন। নিজস্ব চিত্র।

কলসি, বালতির লাইনটা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। পুরসভার পাঠানো একটামাত্র ট্যাঙ্কার থেকে জল কখন মিলবে, তার প্রতীক্ষায় ঠায় দাঁড়িয়ে প্রায় জনা পঞ্চাশ বাসিন্দা।

Advertisement

গরমের দাবদাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিল্পাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এই ছবিটাই দেখা যাচ্ছে। তার উপরে জলাধারগুলির জলস্তর কমতে থাকায় কপালে ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনের কর্তাদেরও। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে গোটা গরমকাল জুড়ে জল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যাবে কি না, তা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে।

গরমে আসানসোল শিল্পাঞ্চল জুড়ে জলসঙ্কট নতুন কোনও সমস্যা নয়। তবে এ বার যেন তার ছবিটা আরও ভয়াবহ ঠেকছে বাসিন্দাদের কাছে। কুলটির বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা সব থেকে বেশি বলে জানান এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা সুলেখা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দিনে এক বার মাত্র জল আসছে। তার পরিমাণও অত্যন্ত কম। প্রতিদিনের কাজটুকুও মিটছে না।’’

Advertisement

চলবলপুর, নিয়ামতপুর, বরাকর, শীতলপুর, রানিতলা প্রভৃতি এলাকায় সঙ্কট তীব্র আকার নিয়েছে বলে খবর। সালানপুরের দেন্দুয়া, আল্লাডি, জেমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং আসানসোলের কল্যাণপুরের একাংশ, নিশ্চিন্তা, গোপালপুর-সহ বেশ কয়েকটি লাগোয়া গ্রামেও কুয়োর জল তলানিতে ঠেকেছে। ন্যূনতম প্রয়োজনের জলের জন্যও হাপিত্যেশ করতে হচ্ছে বলে জানান বাসিন্দারা। একই অবস্থা বারবনির বিভিন্ন গ্রামেও।

মহকুমা প্রশাসন ও পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, নির্জলা এলাকাগুলিতে জলের ট্যাঙ্কার পাঠানো হচ্ছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা নিতান্ত কম বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। কল্যাণপুরের হৃষিকেশ সরকার বলেন, ‘‘এলাকায় খাল, বিলের চেহারা ফুটিফাটা। আরও বেশি জলের ট্যাঙ্কার না পাঠালে এ বার নির্জলা থাকতে হবে বাসিন্দাদের।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক সময় জল নেওয়া নিয়ে হাতাহাতি, বচসাতেও জড়িয়ে পড়ছেন বাসিন্দারা।

আসানসোল পুরসভার জল দফতরের মেয়র পারিষদ পূর্ণশশী রায় জানান, পুর-এলাকায় প্রতি দিন ৮ কোটি লিটার জলের চাহিদা রয়েছে। সাবমার্সিবল পাম্প দিয়ে দামোদর থেকে জল তুলে এলাকায় সরবরাহ করা হয় বলে জানান তিনি। পূর্ণশশীবাবুর দাবি, ‘‘ডিভিসি কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন, জলস্তর স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক নীচে নেমে যাওয়ায় মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কমানো হচ্ছে। এমন চলতে থাকলে জল সরবরাহ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।’’

ডিভিসির তরফে জানানো হয়েছে, প্রতি দিন মাইথনের জলস্তর কমে যাচ্ছে। দ্রুত বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে ডিভিসি কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা। উপায় না দেখে জলের অপচয় বন্ধ করার জন্য নাগরিকদের আবেদন করা হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর।

আসানসোলের মহকুমাশাসক প্রলয় রায়চৌধুরীর যদিও জানান, শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিঘ্নে জল সরবরাহের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement