nকুলটির শীতলপুরে ভাল্ভ থেকে জল পড়ে এ ভাবেই। নিজস্ব চিত্র
জল-সঙ্কট মেটাতে প্রায় ২৩৯ কোটি টাকা খরচ করে কুলটিতে নতুন একটি জল-প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। তবে কারিগরি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়ায় এখনও প্রায় ২৫ শতাংশ এলাকায় জল সরবরাহ হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এ ছাড়া, যে সব এলাকায় জল সরবরাহ হচ্ছে, সেখানে জলের অপচয় দেখা যাচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রে দাবি। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, আসানসোল পুরসভার জল দফতরের উপযুক্ত দেখভালের অভাবেই এই অবস্থা।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, কুলটি বিধানসভা এলাকার ৭৫ শতাংশ বাসিন্দা জলের গৃহ-সংযোগ পেয়েছেন। কিন্তু এখনও বেশ কিছু এলাকায় পাইপলাইন বসানো সম্ভব হয়নি। সেখানে বাসিন্দারা জল-সঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। সম্প্রতি বরাকরের ফরসাডাঙালের বাসিন্দাদের একাংশ পানীয় জল না পেয়ে দীর্ঘক্ষণ জিটি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন।
তবে এর উল্টো চিত্রও রয়েছে। শীতলপুরে গিয়ে দেখা গেল, রাজ্য সড়কের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া কুলটি জল প্রকল্পের ২৪ ঘণ্টার পাইপলাইনের ভাল্ভ দিয়ে প্রচুর পরিমাণে জল বেরিয়ে যাচ্ছে। আশপাশের এলাকা কার্যত জলে ভেসে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেককেই সেই জলে স্নান করতেও দেখা গেল। ইস্কো বাইপাস রাস্তার উপরে আলডি লাগোয়া এলাকায় একটি কালভার্টের পাশেও দেখা গেল, ২৪ ঘণ্টার পাইপলাইনের ভাল্ভ থেকে তীব্র বেগে জল বেরিয়ে রাস্তায় পড়ছে। প্রায় একই পরিস্থিতি কুলটির নিউ রোড এলাকাতেও। কুলটি কলেজ রোডে সদ্য বসানো পাইপলাইন ফেটে অনর্গল জল বেরোচ্ছে। পুরসভার জলের ট্যাঙ্ক ভরার জন্য নিয়ামতপুর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া অঞ্চলে একটি পাইপলাইন রয়েছে। সেখান থেকেও ২৪ ঘণ্টা বিরামহীন জল বেরিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা কলেজ শিক্ষক স্নেহেশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এখনও গ্রীষ্মে কুলটির বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা এক বালতি জলের জন্য হাহাকার করেন। সেখানে জলের এই অপচয় মানা যায় না। দ্রুত পদক্ষেপকরা উচিত।’’
পুরসভার মেয়র পারিষদ (জল) পূর্ণশশী রায় জানান, কুলটির পানীয় জল-সঙ্কট মেটাতে একাধিক বার বিশদ প্রকল্প রিপোর্ট বানানো হয়েছে। কারিগরি সমস্যা থাকায় সেগুলি বাতিলও হয়েছে। সাবেক কুলটি পুরসভার সময়ে জল প্রকল্প রূপায়ণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার থেকে পাওয়া অনুদান একবার ফেরতও চলে গিয়েছে। অবশেষে আসানসোল পুরসভার বর্তমান বোর্ডের তত্ত্বাবধানে প্রায় ২৩৯ কোটি টাকার নতুন জল-প্রকল্পটি দিনের আলো দেখেছে। পূর্ণশশীবাবু বলেন, ‘‘এই অবস্থায় জলের অপচয় কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। দফতরের আধিকারিকদের দ্রুত পদক্ষেপ করার জন্য নির্দেশদেওয়া হচ্ছে।’’
তবে শহরবাসীর মতে, সময়ই বলবে, এমন ‘পদক্ষেপ’-এ আদৌ জলের অপচয় বন্ধ হয় কি না।