পথে দাপাচ্ছে ভ্যানো। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য সড়ক ধরে দুরন্ত গতিতে চলছে টোটো। কখনও সওয়ারি পাঁচ-ছয়, কখনও আট। পথও কম নয়। কেউ যাচ্ছেন কিলোমিটার দুয়েক, কেউ পাঁচ-সাত কিলোমিটার। ফল যা হওয়ার তাই! কখনও টোটো উল্টে কখনও অন্য গাড়ির ধাক্কায় ঘটছে দুর্ঘটনা।
জাতীয় সড়ক তো বটেই, রাজ্য সড়কেও টোটো, মোটরচালিত ভ্যান চলাচল নিয়মবিরুদ্ধ। অথচ নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই অবাধে চলছে যাতায়াত। পুলিশ, প্রশাসনেরও নজর নেই বলে অভিযোগ। সোমবার রাতেই এসটিকেকে রোডে ম্যাটাডরের ধাক্কায় মোটরচালিত ভ্যান উল্টে মারা গিয়েছেন চার জন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আলোহীন রাস্তাতে অত্যন্ত দ্রুত চলছিল ভ্যানটি। তারও কয়েকদিন আগে গুসকরায় জাতীয় সড়কে আট জন সওয়ারি নিয়ে চলছিল টোটো। তা উল্টে মারাও যান এক জন। চালক গ্রেফতারও হন। তারপরেও হুঁশ ফেরেনি। কাটোয়ার মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরির যদিও দাবি, বারবার সচেতনতা প্রচার চালানো হচ্ছে। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে বলে তাঁর আশ্বাস। ট্রাফিক ওসি সংগ্রাম মোহিতেরও দাবি, ‘‘রাজ্য সড়কে দিনভর নজরদারি সম্ভব না হলেও আমরা টোটো দেখলে আটকাই।’’
বেপরোয়া: বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কে ছুটছে টোটো। নিজস্ব চিত্র
এসটিকেকে রোড ও বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্যসড়কে বছর খানেক ধরেই টোটোর দেখা মেলে। কখনও রাজ্য সড়কের উপর ছোটলাইনের পাড় থেকে যাত্রী নিয়ে তারা চলেছে কোশিগ্রাম, সিপাইদিঘি কখনও বা সাত কিলোমিটার দূরে শ্রীখণ্ডে। আবার এসটিকেকে রোডের উপর ন্যাশনাল সিনেমার মোড়ে দাঁড়ানো টোটো চলছে নতুনগ্রাম, জগদানন্দপুর, খাজুরডিহি মায় দাঁইহাট পর্যন্ত। টোটো চালকদের একাংশের দাবি, ট্রাফিক পুলিশের ‘ভয়ে’ এবং রিকশা চালকদের সঙ্গে গোলমাল এড়াতেই বাসস্ট্যান্ড থেকে ১০০ মিটার দূরেই দাঁড়ান তাঁরা। দেখা মেলে ভ্যানেরও। ছোট লাইন পাড় থেকে ভাড়া নিয়ে কেউ শ্রীখণ্ড, কেউ নিগন এমনকী, ৫৬ কিলোমিটার দূরে বর্ধমান পর্যন্তও যান তাঁরা। সওয়ারি না থাকলেও খড়ের গাদা নিয়েও চলে যাতায়াত। ভ্যান চালক বাণী সাঁতরা, আলম মল্লিকেরা বলেন, ‘‘বছর পাঁচেক ধরে এ ভাবেই চালাচ্ছি। ভিড় কম থাকায় যাত্রীরাও বাসের থেকে ভ্যানই বেশি পছন্দ করেন।’’ মঙ্গলবার বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়ক ধরে ৯৫ কিলোমিটার দূরে পাথরচাপুরী মেলায় যেতে দেখা যায় কিছু ভ্যানকে।
আরও পড়ুন: ফের কঙ্কাল পূর্বস্থলীতে
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ৩৬৭টি টোটোর অনুমতি রয়েছে। তার বাইরেও প্রায় শ’তিনেক টোটো চলে। রাজ্য সড়কের উপর চলা বেশির ভাগ টোটোর নম্বর নেই বলে জানান খোদ চালকরাই। তাঁদের অজুহাত, ‘‘শহরে নম্বর ছাড়া কড়াকড়ি হলেও বাইরে ততটা নেই।’’ টোটো ইউনিয়নের সম্পাদক শ্যামল মণ্ডলের যদিও দাবি, ‘‘রাজ্য সড়কে চলা টোটো চালকরা ইউনিয়নের সদস্য নন।’’