চলল দেদার খাওয়াদাওয়াও। সিটি সেন্টারে। নিজস্ব চিত্র
ভালবাসার দিন বলে কথা। দিনটিকে পালন করতে বেলুনে সেজেছে রেস্তরাঁ। শুধু এ দিনের জন্যই গোলাপের অস্থায়ী পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফুল বিক্রেতা। পার্কে গড়ে তোলা হয়েছে ‘ফটোগ্রাফিক ভিউ’। মোটের উপর, শহরে ‘প্রেম দিবসটা’ আরও রঙিন করে তুলতে মাতোয়ারা সকলেই।
এ দিন শহরের বিভিন্ন পার্ক ঘুরে দেখা গিয়েছে, ভিড় চোখে পড়ার মতো। সিটি সেন্টারের একটি পার্কে এ দিনের জন্য গড়ে তোলা হয়েছিল বিশেষ ফটোগ্রাফিক জোন। সেখানে অনেকেই প্রিয়জনকে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘প্রপোজ’ করেছেন। ছবি তুলেছেন। অনেকেই গিয়েছেন ছেলে-মেয়েদের নিয়েও। সন্তানদের সামনেই ‘প্রপোজ’ করার অভিনয় করেছেন তাঁরা। মজা করে স্মার্টফোনে সেই বিশেষ মুহূর্ত বন্দিও করে রাখছেন। বেনাচিতি থেকে আট বছরের মেয়ে সঞ্জনাকে নিয়ে ওই পার্কে এসেছিলেন রামপ্রসাদ রায় ও তাঁর স্ত্রী সুরভিদেবী। তাঁদের ছবি তুলে দিয়েছেন সঞ্জনা। সুরভিদেবী বললেন, ‘‘ভালবাসার দিনে ভালবাসার মানুষদের সঙ্গে একটু অন্যরকম কাটাতে পেরে সত্যিই খুশি আমরা।’’
কতই বা বিক্রি হল ফুল? সিটি সেন্টারের একটি ফুলের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এমনিতে দিনে দেড়শো গোলাপ নিয়ে আসেন তিনি। কিন্তু এ দিনের জন্য এনেছিলেন দেড় হাজার। লাল, সাদা, গোলাপি, হলুদ-সব রঙের গোলাপ ছিল তাঁর সম্ভারে। অন্যদিন একটি গোলাপ ১০ টাকায় বিক্রি হয়। এ দিন তিনগুণ, চারগুণ বেশি দামে বিকিয়েছে। তবুও বিকেলের মধ্যেই প্রায় সব গোলাপ শেষ। শেষের দিকে গোলাপ নিতে এসে অনেকে হতাশও হয়েছেন। গোলাপ নিতে এসেছিলেন কলেজ পড়ুয়া দীপ্তেশ পাত্র ও দীপশিখা পাত্র। তাঁরা বলেন, ‘‘শেষের দিকে ভাল গোলাপ পেলাম না!’’ সনু চৌধুরী ও সুমন সাহা আবার শুধু এ দিনের জন্যই লাল গোলাপের পসরা নিয়ে বসেছিলেন জাতীয় সড়কের ধারের একটি শপিং মলের সামনে। ক্রেতাদের ভিড় ছিল সেখানেও। শপিং মলের সামনে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অনেকেই গোলাপ কিনে প্রিয়জনকে তা উপহার দিয়ে হাতে হাত ধরে শপিং মলের সিঁড়িতে বসে গিয়েছেন অনুষ্ঠান দেখতে।
বিশেষ এই দিনে পেটপুজো হবে না, তা আবার হয়! ক্ষুদিরাম সরণির ধারে মূলত কিশোর ও কিশোরীদের জন্য সস্তায় চিকেনের নানা পদ, সঙ্গে টিভি দেখা ও দেদার আড্ডা দেওয়ার জন্য রয়েছে একাধিক কাউন্টার। এ দিন লাল রঙের হার্ট আকৃতির বেলুন দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল সেই কাউন্টারগুলি। নানা ধরনের কেক, পেস্ট্রি, সঙ্গে মকটেলেরও ব্যবস্থা ছিল। গরম এখনও সেভাবে পড়েনি। সন্ধ্যার পরে বাতাসে ছিল সামান্য হিমেল পরশ। তাই রাতের দিকে কাবাব ও তন্দুরিও বিক্রি হয়েছে দেদার।
সন্ত ভ্যালেন্টাইনকে কে কতটা মনে রেখেছেন বা আদৌ তাঁর কথা মনে পড়েছে কি না জানা নেই। তবে দিনটা চুটিয়ে উপভোগ করেছেন শিল্পশহরের বাসিন্দারা।