Love Letter

প্রাক্তনীর জন্য ‘প্রেমপ্রস্তাব’ অধ্যক্ষের প্যাডে! কলেজের দুই ছাত্রীর ‘কীর্তি’ ফাঁস বর্ধমানে, সটান বহিষ্কার

মঙ্গলবার কলেজের এক ছাত্রী উদ্দেশে অধ্যক্ষের প্যাডে লেখা বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যক্ষের সই ও স্ট্যাম্প ছিল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

গুসকরা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৫৬
Share:

কলেজের অধ্যক্ষের নাম করে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ঘিরে শোরগোল। —নিজস্ব চিত্র।

কলেজ ছাত্রীর প্রেমে পড়েছেন এক প্রাক্তনী। কিন্তু সেই ছাত্রী কোনও রকম সাড়া না দেওয়ায় পড়াশোনা লাটে উঠেছে! তাঁর ভবিষ্যতের কথা ভেবে ওই ছাত্রী যাতে ‘প্রেমপ্রস্তাব’ নিয়ে বিবেচনা করেন, সেই মর্মে বর্ধমানের গুসকরা কলেজের অধ্যক্ষের প্যাডে প্রকাশিত এক ‘বিজ্ঞপ্তি’র রহস্য ফাঁস হল। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছেন, অধ্যক্ষের সই জাল করে ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন কলেজেরই দুই ছাত্রী। ঘটনাচক্রে, তাঁদের মধ্যেই এক জন সেই ছাত্রী, যাঁকে ‘প্রেমপ্রস্তাব’ দেওয়া হয়েছে! জড়িত রয়েছেন ওই প্রাক্তন ছাত্রও। এর পরেই অভিযুক্ত দুই ছাত্রীকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

মঙ্গলবার কলেজের এক ছাত্রী উদ্দেশে অধ্যক্ষের প্যাডে লেখা বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যক্ষের সই ও স্ট্যাম্প ছিল। বিজ্ঞপ্তিতে লেখা ছিল, ‘‘গুসকরা মহাবিদ্যালয়ে পাঠরত পঞ্চম সিমেস্টারের ছাত্রী... ( চিঠিতে ছাত্রীর নাম এবং বাবার নামও উল্লেখ করা হয়েছে) জানানো যাচ্ছে যে, বেশ কিছু দিন ধরে আমাদের মহাবিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন ছাত্র আপনার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এক কথায় বলতে গেলে আপনার প্রেমে পড়েছে। কিন্তু আপনি কোনও সদুত্তর দিচ্ছেন না। যার ফলে তিনি পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছেন না।’’ শেষাংশে লেখা হয়েছে, ‘‘আপনার কাছে একান্ত অনুরোধ, আপনি কিছু একটা করুন যাতে আমাদের ছাত্রের ভবিষ্যতে কোনও সমস্যা না হয় এবং ঠিক করে পড়াশোনা করতে পারে।’’

সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসার পরেই বিতর্ক তৈরি হয়। অধ্যক্ষ সুদীপ চট্টোপাধ্যায় জানান, তিনি বিষয়টি পুলিশের কাছে জানিয়েছেন। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণ তদন্তে দুই ছাত্রীর জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। কলেজ সূত্রে খবর, পরিচালন সমিতির পক্ষ থেকে তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। ডাকা হয়েছিল ওই প্রাক্তন ছাত্রকেও। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিন জনের নিজেদের দোষ স্বীকার করেন।

Advertisement

কলেজ সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিজ্ঞপ্তি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতেই তাতে উল্লিখিত পঞ্চম সিমেস্টারের সেই ছাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন অধ্যক্ষ। তখনই সেই ছাত্রী নিজের ভুল স্বীকার করে নেন। জানান, অধ্যক্ষের সই স্ক্যান করে নকল বিজ্ঞপ্তি তৈরি করা হয় কম্পিউটারে ফোটোশপে। অধ্যক্ষ সুদীপ বলেন, ‘‘কলেজের প্যাড ব্যবহার করে এবং সই সিল স্ক্যান করে একটি ভুয়ো বিজ্ঞপ্তি তৈরি করা হয়। সেটি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এই ঘটনায় জড়িত দুই ছাত্রী ও এক প্রাক্তন ছাত্রকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তারা আমাদের কাছে স্বীকার করেছে, তারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছিল। ক্ষমা চেয়ে তারা নিজেরাই মুচলেকা দিয়েছে। আমরা তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এফআইআর করিনি। তবে বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ওই দুই ছাত্রীকে সাময়িক ভাবে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement