Post office clerks

অতিমারিতে ভাল কাজ, পুরস্কার দুই ডাককর্মীকে

একজন ওষুধ পৌঁছতে ভাগলপুরে যান।অন্যজন নিয়ম করে বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন জরুরী নথিপত্র থেকে প্রবীণদের পেনশনের টাকা।অতিমারির সময় ঝুঁকি নিয়ে এই কাজ করার স্কীকৃতি হিসেবে বর্ধমানের দুই কর্মীকে শুক্রবার ‘ডাক দিবসে’ কলকাতায় পুরস্কার তুলে দিল ডাক বিভাগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২০ ০১:৩১
Share:

অসীম প্রামাণিক ও মানসকুমার মাথুর।নিজস্ব চিত্র।

করোনা-পরিস্থিতির মধ্যেও নীরবে কাজ করে গিয়েছেন তাঁরা। পরিবহণ ব্যবস্থায় নানা সমস্যা থাকলেও জরুরি চিঠি, জিনিসপত্র নির্দিষ্ট ঠিকানা পৌঁছনো থেকে শুরু করে পেনশেনের টাকা দেওয়া, সব কাজই চালিয়ে গিয়েছেন ডাককর্মীরা। অতিমারির সময় ঝুঁকি নিয়ে এই কাজ করার স্কীকৃতি হিসেবে বর্ধমানের দুই কর্মীকে শুক্রবার ‘ডাক দিবসে’ কলকাতায় পুরস্কার তুলে দিল ডাক বিভাগ।

Advertisement

বর্ধমানের গুসকরা স্কুলমোড়ের বাসিন্দা অসীম প্রামাণিক ২০০৪ সাল থেকে ডাক বিভাগের ‘মেল গার্ড’ হিসেবে কাজ করছেন। এখন বর্ধমান ‘রেলওয়ে মেল সার্ভিস’ (আরএমএস) বিভাগে কর্মরত। বর্ধমান স্টেশনের আরএমএস অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অতিমারির মধ্যে অসীমবাবু বিভিন্ন জায়গায় ওষুধ-সহ চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছনোর কাজ করেছেন নিরলস ভাবে। ৫ জুন ওষুধ পৌঁছতে ভাগলপুরে যান। বিশেষ গাড়িতে জরুরি ওষুধ পৌঁছে তিন দিন পরে ফেরেন। বছর আটান্নর অসীমবাবুকে তাই ‘করোনা যোদ্ধা’ সম্মান দিয়েছে ডাক বিভাগ। অসীমবাবু বলেন, ‘‘লকডাউনে মানুষজন চরম বিপাকে পড়েছেন। এই সময়ে জরুরি ওষুধ পৌঁছে দিতে হবে শুনে না করিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই গিয়েছি।’’ তিনি জানান, বাড়িতে অশীতিপর মা রয়েছেন। তাই ভাগলপুর থেকে ফিরে সাত দিন নিজেই নিভৃতবাসে ছিলেন।

পুরস্কার পেয়েছেন রায়নার সেহারাবাজার ডাকঘরের পোস্টম্যান মানসকুমার মাথুরও। তাঁর বাড়ি রায়নারই তোড়কোনায়। ১৯৯৬ সাল থেকে ডাকবিভাগের সঙ্গে যুক্ত। ২০১৬ সাল থেকে সেহারাবাজার ডাকঘরে কাজ করছেন মানস। ডাক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, লকডাউন পর্বে এক দিনও ছুটি নেননি তিনি। নিয়ম করে বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন জরুরী নথিপত্র থেকে প্রবীণদের পেনশনের টাকা। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকায় অনেক বয়স্ক মানুষ আছেন। তাঁদের পেনশনের টাকা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু করোনার জন্য পোস্ট অফিসে আসা ঝুঁকির। তাই তাঁদের টাকা পৌঁছে দিয়েছি।’’ এ ছাড়া, বাইরে থেকে ডাক বিভাগের মাধ্যমে আনা নানা ওষুধও সযত্নে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ-প্রশাসনের কর্মীদের সঙ্গে আমরাও লড়াই চালিয়ে গিয়েছি। তার প্রতিদান পেয়ে ভাল লাগছে।’’

Advertisement

বর্ধমান আরএমএসের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যখন মানুষ বাড়ির বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছিলেন, তখন কর্তব্যে অবিচল থেকেছেন অসীমবাবু। এই পুরস্কার ওঁর প্রাপ্য।’’ ডাক বিভাগের বর্ধমান ডিভিশনের সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে প্রত্যেক ডাককর্মী নীরবে কাজ করেছেন। তাই সব ডিভিশন থেকে ভাল কাজ করা কর্মীদের সম্মান দেওয়া হচ্ছে। মানসবাবুর এই পুরস্কার প্রাপ্তি আমাদের কাছে গর্বের।’’ ভাল কাজ করা কর্মীদের বর্ধমান ডিভিশনের তরফেও সম্মান জানানোর কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement