lockdown

কড়া নজরে ‘লকডাউন’, গ্রেফতার ৮৮

বৃহস্পতিবারের মতো এই এই ছবি দেখা গেল শনিবারও। দিনের শেষে ‘লকডাউন’ ভাঙার অভিযোগে জেলায় মোট ৮৮ জন গ্রেফতার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২০ ০২:৪৭
Share:

বর্ধমানের তেলিপুকুরে শনিবার সকালে খুলল চায়ের দোকান, জমল ভিড়। নিজস্ব চিত্র

সকালে কোনও কোনও এলাকায় রাস্তায় কিছু সাইকেল-মোটরবাইক। দু’-এক জায়গায় চায়ের দোকানে ঝাঁপ খোলা। নানা অজুহাতে রাস্তায় কিছু পথচারী। কিন্তু পুলিশের টহল শুরু হতেই সর্বত্র শুনশান। বৃহস্পতিবারের মতো এই এই ছবি দেখা গেল শনিবারও। দিনের শেষে ‘লকডাউন’ ভাঙার অভিযোগে জেলায় মোট ৮৮ জন গ্রেফতার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বর্ধমান শহরে বুধবার থেকে ‘লকডাউন’ চলছে। কিন্তু শুক্রবার সকালে বর্ধমানের তেঁতুলতলায় আনাজ ও মাছের বাজারে ভিড় উপচে পড়েছিল। শনিবার রাজ্য সরকার নির্ধারিত ‘লকডাউন’ ছিল। মোড়ে-মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড ছিল। কিন্তু রাস্তায় কেউ প্রায় না বেরনোয় পুলিশকর্মীদের বিশেষ ব্যস্ত হতে হয়নি। জিটি রোড ছিল খাঁ-খাঁ। শহরের বিভিন্ন বাজারও পুরোপুরি বন্ধ ছিল। তেঁতুলতলা বাজারে ফুল নিয়ে এসেছিলেন এক মহিলা বিক্রেতা। তাঁকে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। তেলিপুকুরে সকালে একটি চায়ের দোকান খুলতে দেখা যায়। রাস্তায় সাইকেল-মোটরবাইকে বেরোনো কিছু লোকজনকে আটকায় পুলিশ। উপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারায় কয়েকজনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
বর্ধমান শহর লাগোয়া সদরঘাট, পলেমপুর, বেলকাশ-সহ নানা এলাকাতেও ‘লকডাউন’ সম্পূর্ণ ভাবে পালিত হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। মেমারিতেও একই ছবি দেখা যায়। শহরের রাস্তাঘাট ছিল কার্যত জনশূন্য। নুদিপুর-সহ মেমারি জিটি রোডে পুলিশের কড়া নজরদারি ছিল। কাউকে রাস্তায় বেরোতে দেখলে কাগজপত্র পরীক্ষা করা হয়।
এ দিন রাজধানী এক্সপ্রেসে বর্ধমানে এসে নামা যাত্রীরা বাড়ি ফিরতে দুর্ভোগে পড়েন। বিশেষ ট্রেনটি সকাল সাড়ে ৮টায় বর্ধমানে ঢোকে। হুগলির দাদপুরের জাহাঙ্গির শেখ, সাগরদিঘির আসগর শেখরা বলেন, ‘‘দিনভর স্টেশনে কাটাতে হচ্ছে। থানাও গিয়েও কোনও বন্দোবস্ত হয়নি।’’
কালনায় বৃহস্পতিবারের মতো এ দিনও সকাল থেকে নানা ছুতোয় কিছু মানুষজন বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন। তবে সকাল ১০টার পর থেকে গোটা শহর শুনশান হয়ে যায়। কালনা থানার পুলিশ কয়েকটি ছোট দলে বিভক্ত হয়ে শহর ও লাগোয়া এলাকায় টহল দেয়। বাড়ির বাইরে বেরোনো কয়েকজনকে ধমক দিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শহরের পুরনো বাসস্ট্যান্ড, সোনাপট্টি, ১০৮ শিবমন্দির চত্বর, নতুন বাসস্ট্যান্ড, চকবাজার-সহ সমস্ত জনবহুল এলাকা এ দিন ছিল ফাঁকা। খেয়াঘাটে ঢোকা-বেরনোর রাস্তা বন্ধ ছিল। গ্রামীণ এলাকায় অবশ্য আমন চাষের কাজে নামতে দেখা গিয়েছে চাষিদের। কালনা ১ ব্লকের উপলতি গ্রামে এ দিন ঝাঁপান উৎসব ছিল। ‘লকডাউন’ চলায় তা বাতিল করেন গ্রামবাসী।
কাটোয়া মহকুমায় কাটোয়া ও দাঁইহাট শহর ছাড়া গ্রামীণ এলাকাতেও রাস্তাঘাট ফাঁকা ছিল। আনাজ থেকে শুরু করে মুদির দোকানও এ দিন খোলা রাখতে দেখা যায়নি। সকালেই পুলিশ বাসস্ট্যান্ড, স্টেশন বাজার, কাছারি রোড, লেনিন সরণি, নিচুবাজার-সহ নানা রাস্তায় টহল দেয়। পুলিশ জানায়, বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু লোক জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বেরনোয় তাঁদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
‘লকডাউন’ অমান্য করার অভিযোগে শনিবার ভাতারের বিভিন্ন এলাকায় ১৫ জনকে আটক করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দোকান খোলা, অযথা রাস্তায় বেরনোর কারণে ভাতার বাজার, বলগোনা, বামুনাড়া, কুবাজপুর, শিবপুর, ছয় মাইল, বেলেন্ডা-সহ নানা এলাকা থেকে ওই ব্যক্তিদের আটক করা হয়। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement