ষষ্ঠ জেলা বইমেলার উদ্বোধন উপলক্ষে। রানিগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের ২,৪৮০টি গ্রন্থাগারে গ্রন্থাগারিক-সহ নানা ক্ষেত্রে মোট শূন্য পদ রয়েছে প্রায় চার হাজার। দ্রুত ৭৩৭টি পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সোমবার রানিগঞ্জের রাজবাড়ি মাঠে পশ্চিম বর্ধমান জেলা বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এমনটাই দাবি করলেন রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রীসিদ্দিকুল্লা চৌধুরী।
এ দিন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা জানান, পশ্চিম বর্ধমানে ৬১টি গ্রন্থাগারে সদস্য রয়েছেন ৮,৯৬৩ জন। বইয়ের সংখ্যা, সাত লক্ষ ৯০ হাজার। এর মধ্যে আমফানের কারণে ও লকডাউন পর্বে ৩৮ হাজার বই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ বছর সারা রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলির জন্য চার কোটি টাকার বই কেনা হয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্র এ জন্য দু’কোটি টাকা করে দিয়েছে। মন্ত্রী এ-ও দাবি করেন, “রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলিতে মূলত গ্রন্থাগারিক-সহ আরও কিছু পদে মোট ৭৩৭ জনকে নিয়োগ হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।”
মন্ত্রী যে স্থানে দাঁড়িয়ে এ কথা বলছেন, সেখান থেকে মাত্র তিনশো মিটার দূরে ‘সিহারসোল স্পোর্টস অ্যান্ড কালচারাল অ্যসোসিয়েশেন রুরাল লাইব্রেরি’। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, সেখানে গ্রন্থাগারিক তো দূরঅস্ত্, কোনও কর্মীই নেই। গ্রন্থাগারের সদস্যেরাই সেটি চালাচ্ছেন। জেলায় ৬১টি গ্রন্থাগার থাকলেও, গ্রন্থাগারিকের সংখ্যা মাত্র ১৪ জন। বাম প্রভাবিত ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল পাবলিক লাইব্রেরি এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশন’-এর পশ্চিম বর্ধমানের সম্পাদক কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “তিন বছর ধরে নিয়োগ হবে বলে শুনছি। হ’লে ভালই।” পাশাপাশি, তৃণমূল প্রভাবিত ‘বঙ্গীয় সাধারণী গ্রন্থাগার ও কর্মী কল্যাণ সমিতি’-র জেলা সম্পাদক দিলীপ নায়েকের বক্তব্য, “শুনছি আমাদের জেলায় আরও ২২ জনকে নিয়োগ করা হবে। সেটা হলে, অনেক অচল গ্রন্থাগার সচল হবে।”
এ দিকে, সিদ্দিকুল্লা জানিয়েছেন, কোনও স্কুল নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক চাইলে গ্রন্থাগার থেকে তা দেওয়া হবে। সেটা পাওয়ার জন্য জেলা গ্রন্থাগারে লিখিত আবেদন জানাতে হবে। জেলা গ্রন্থাগার রাজ্য গ্রন্থাগার দফতরে পাঠাবে। সেখান থেকে এ বিষয়ে অনুমোদন দেবে। মন্ত্রী মলয় ঘটকের প্রস্তাব অনুযায়ী আসানসোলে আরও একটি জেলা বইমেলা করার চেষ্টা করা হবে। এ দিনের মেলার উদ্বোধন করেন মলয়। অনুষ্ঠান মঞ্চের নামকরণ করা হয়েছে শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের নামে।