কংগ্রেস ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ

দলের কর্মীকে মারে গ্রেফতার তৃণমূল নেতা

দলেরই কর্মীকে মারধর এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন তৃণমূলের কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ।ভোটের মুখে এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দলের মধ্যে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৩৪
Share:

দলেরই কর্মীকে মারধর এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন তৃণমূলের কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ।

Advertisement

ভোটের মুখে এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দলের মধ্যে। ধৃত নেতা সাদেক শেখের বিরোধী গোষ্ঠী বলে পরিচিত পঞ্চায়েত প্রধান সুকুর শেখের আবার দাবি, ওই কর্মাধ্যক্ষ সমাজবিরোধীদের এনে এলাকা অশান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। তৃণমূলের কর্মাধ্যক্ষ হলেও সাদেক শেখ প্রকাশ্যেই কংগ্রেসের হয়ে কাজ করছিলেন বলেও তাঁর অভিযোগ। যদিও সাদেক গোষ্ঠীর দাবি, দলীয় মদতে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে।

ঘটনার সূত্রপাত দিন চারেক আগে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুলতানপুর পঞ্চায়েতের ভাটরা গ্রামে জোটের হয়ে প্রচার করছিল কয়েকজন কর্মী। সেখানে জোট প্রার্থীর স্বপক্ষে দেওয়ালে পোস্টার মারতে গেলে ওই গ্রামেরই আইনাল শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মী তাদের বাধা দেন বলে অভিযোগ। তিনি দাবি করেন, ওই দেওয়ালে তৃণমূলের পোস্টার মারা হয়েছে। অভিযোগ, এরপরেই জোটের নেতা কর্মীরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কালনা মহকুমা হসাপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। পরে এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধক্ষ্য, বেগপুর এলাকার কংগ্রেস নেতা হারান শেখ-সহ ৮ জনের নামে মারধর এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই এ দিন সাদেক শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও তাঁর গোষ্ঠীর লোকজনেদের দাবি, ঘটনার দিন সাদেক শেখ সেখানে ছিলেন না। মিথ্যা অভিযোগে তাঁর নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ঘটনায় প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তৃণমূলের একাংশ কর্মীরাই জানান, পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের ওই এলাকায় সাদেক-সুকুরের দ্বন্দ্ব বহু পুরনো। এর আগেও সাদেক শেষ এক বার গ্রেফতার হয়েছিলেন। ভোটের তিন দিন আগে দলের ভোট কাটাকাটি আটকাতেই এই গ্রেফতার বলেও অনেকের দাবি। তৃণমূলের অন্দরের খবর, সুলতানপুর পঞ্চায়েতে দল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। বারবার আলোচনাতেও সাদেক এবং সুকুর গোষ্ঠীর বিবাদ মেটেনি। ভোটের আগে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বিপদের আশঙ্কা করছিলেন জেলার নেতারা। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকে দলের প্রতি বিদ্বেষ তৈরি হয়েছিল পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধক্ষ্যের। আড়ালে বাম-কংগ্রেস জোটকে সাহায্য করতেও শুরু করেছিলেন তিনি। দল এটাকে ভাল চোখে দেখেনি। পাশাপাশি কর্মাধ্যক্ষকে গ্রেফতার করিয়ে বিদ্রোহীদের কাছে একটি কড়া বার্তাও দেওয়া হল।’’

যদিও এলাকায় গোষ্ঠী কলহের কথা স্বীকার করেননি কালনা ১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি উমাশঙ্কর সিংহ রায়। কর্মাধক্ষ্যের গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এটা ঠিক উনি আমার দলের কর্মাধক্ষ্য। তবে কি কারনে ওনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ আবার সাদেক সাহেবের সঙ্গে তাঁর দলের কোনও যোগ নেই বলে জানিয়েছেন ওই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা তৃণমূলের নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। জোটের কোনও নেতা কর্মী ভাটরার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement