পুরভোটে বহিরাগতদের দাপাদাপি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত তৃণমূলই। শনিবার কালনা জুড়ে চেনা-অচেনা মুখে দেখার পরে কিছু নেতারা বলছেন, জয় তো এমনিই আসত, এ সবে দল নিয়ে খারাপ বার্তা গেল। আর এক দল নেতা আবার দাবি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কিছু জায়গায় খারাপ ফলের আশঙ্কা রয়েছে। তাই ঝুঁকি না নেওয়ায় শ্রেয়।
রবিবার দিনভর এ নিয়ে আলোচনার পরে রাতে কালনা শহরে তৃণমূল নেতা-কর্মী-প্রার্থীদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানেও বহিরাগতের প্রসঙ্গ ওঠে। ওই বৈঠকে হাজির কয়েকজন কর্মী জানান, বহিরাগতদের দাপাদাপি নিয়ে নানা মত নেতাদের। সোমবার শহরের এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘সব ওয়ার্ডে তো আমাদের বিরুদ্ধে বিরোধীরাও অভিযোগ তোলেনি। সাধারণ মানুষেরও তেমন অভিযোগ নেই। ফল বেরোনোর পরে এই ওয়ার্ডের দিকেই আমাদের বিশেষ নজর থাকবে। বোঝা যাবে মানুষ দলের কেমন মূল্যায়ন করলেন।’’
তবে এ দিন সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলল কোন দল কত আসন পেতে পারে তা নিয়ে। মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে মহারাজা উচ্চবিদ্যালয়ে কালনা পুরসভার গণনা শুরু হবে। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনটি ঘরে থাকছে ৯টি টেবিলে গণনা চলবে। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘বোর্ড দখল নিয়ে আমাদের মনে কোনও সংশয় নেই। এই প্রথম দল একক ভাবে এই পুরসভায় ক্ষমতায় আসতে চলেছে। তবে ভোট নিয়ে আমাদের গায়ে যে কালি লেগেছে তা তোলার জন্য পুর এলাকায় মানুষের জন্য প্রচুর কাজ করতে হবে।’’
সিপিএমও কয়েকটি ওয়ার্ডে জয়ের আশা করছে। দলের বেশ কিছু নেতা জানিয়েছেন, সকাল থেকে ঘণ্টা আড়াই বেশির ভাগ ওয়ার্ডেই ঠিকঠাক ভোট হয়েছে। ওই সময় বুথগুলিতে লম্বা লাইনও দেখা গেছে। দলের স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী কর্মী সমর্থকদের একটা বড় অংশকে এই সময়ে ভোট দেওয়ানো গিয়েছে। এক সিপিএম নেতার কথায়, ‘‘যখন ছাপ্পা দেওয়ার খবর পেলাম, তখন বেশির ভাগ ভোটারই ভোট দিয়ে ফেলেছেন। ফলে জয়ের আশা করাই যায়।’’ পাশাপাশি যাঁরা ভোট দিতে পারেননি তাঁদের ক্ষোভকে হাতিয়ার করেই বিধানসভায় নামারও স্বপ্ন দেখছে সিপিএম। দলের কালনা জোনাল কমিটির সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শাসকদল যা করেছে সাধারন মানুষ তা দেখেছেন। তারা নিশ্চয় পরে বাম জমানার ভোটের সঙ্গে এ বারের ভোটকে মেলাবেন।’’ তবে বিরোধীদের তোয়াক্কা না করে জেলা সভাপতি দেবু টুডুর বক্তব্য, ‘‘পুরভোট নিয়ে ওরা অনেক মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। মানুষের রায় আমাদের সঙ্গেই থাকবে।’’