আসানসোলে তখন বেধেছে গোলমাল। —নিজস্ব চিত্র।
জেলা গ্রন্থাগারের পরিচালন সমিতির নির্বাচন ঘিরে রবিবার ধুন্ধুমার হল আসানসোলে। সিপিএম-তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হাতহাতি বেধে যায়। সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকেদের হাতে প্রহৃত হয়েছেন দলের নেতা তথা পুরসভার বিরোধী দলনেতা ওয়াসিমুল হক-সহ বেশ কয়েক জন। হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে ঘণ্টাখানেক জিটি রোড অবরোধ করেন সিপিএম কর্মী। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, সিপিএম সমর্থকেরাই তাঁদের শিবিরে চড়াও হয়ে কর্মীদের মারধর করেছেন।
এই নির্বাচনে সিপিএম সমর্থিত ‘প্রগতিশীল কমিটি’ ও তৃণমূল সমর্থিত ‘উন্নয়ন কমিটি’ ১২টি আসনেই প্রার্থী দেয়। এ দিন সকাল ৯টা থেকে ভোট শুরু হয়। সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, সকাল ১০টা নাগাদ তৃণমূলের আসানসোল উত্তর ব্লক সভাপতি গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জনা পঞ্চাশ সমর্থক তাঁদের শিবিরে হামলা চালায়। মারধর করা হয় প্রার্থী ও সমর্থকদের। প্রহৃত হন ওয়াসিমুল হক। তাঁকে প্রথমে আসানসোল জেলা হাসপাতাল, পরে আপকার গার্ডেনে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওরা নির্বিচারে আমাদের কর্মীদের রাস্তায় ফেলে মারধর করেছে। অনেকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছে।’’ দুপুরে কয়েকশো সিপিএম কর্মী বিএনআর-এর কাছে জিটি রোড অবরোধ করেন। এসিপি (সেন্ট্রাল) বরুণ বৈদ্যর নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
তৃণমূল নেতা গুরুদাসবাবুর অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, ‘‘শান্তিতে ভোট হচ্ছিল। হঠাৎ সিপিএমের কিছু লোক আমাদের শিবিরে এসে ভাঙচুর শুরু করে। আমরা শুধু তার প্রতিবাদ করেছি। কোনও প্ররোচনার সৃষ্টি করিনি।’’ গোলমালের পরেই গ্রন্থাগার লাগোয়া এলাকায় পুলিশের বড় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। সিপিএম সমর্থক ও প্রার্থীরা অবশ্য ঘটনার পরে এলাকা থেকে চলে যান। নার্সিংহোমে ওয়াসিমুল হককে দেখতে যান আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তবে এ দিনের ঘটনা নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূল মারামারি করে না।’’ রাতে ওই ভোটের ফল বেরোয়। ১২টি আসনেই জিতেছেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা।