আউশগ্রামে এই জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের পতাকা পুঁতে, ট্রাক্টরে চাষ দিয়ে দু’টি জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে আউশগ্রামে। বৃহস্পতিবার বিকালে ঘটনাটি ঘটে আউশগ্রামের ভেদিয়া পঞ্চায়েতের সাগরপুতুল গ্রামে। জমির মালিকেরা বৃহস্পতিবার রাতে এলাকার কয়েক জনের নামে আউশগ্রামের ছোড়া ফাঁড়িতে দু’টি পৃথক অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত। জমি দখলের ব্যাপারে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের আউশগ্রাম ২ ব্লক সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষের বিরুদ্ধে। যদিও রামকৃষ্ণ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। তৃণমূল এ ধরনের কাজ সমর্থন করে না। যদি কেউ এমন কাজ করে থাকেন, তবে প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগরপুতুলের বাসিন্দা বছর পঁয়ষট্টির নিভারানি গুপ্ত বর্তমানে বোলপুরে থাকেন। তাঁর অভিযোগ, বনকুল মৌজায় তাঁর কমবেশি দু’বিঘা জমি রয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে একদল লোক তাঁর জমিতে গিয়ে জোর করে তৃণমূলের পতাকা পুঁতে ট্রাক্টরে করে চাষ দেন বলে অভিযোগ। বাধা দিতে গেলে তাঁকে প্রাণে মারার ‘হুমকি’ দেওয়া হয়। নিভারানির দাবি, “সাগরপুতুল দুর্গা মন্দিরেভোটের প্রচারে এসে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষ আমার জমি দখলের জন্য উস্কানি দেন। ভোটের পরে জমিটি দখল করবেন বলেও জানান।’’ যদিও ব্লক সভাপতির দাবি, পুরোটাই মিথ্যা। প্রচারে গিয়ে এই ধরনের কথা বললে, তখনই অভিযোগ করা উচিত ছিল। একই অভিযোগ করেছেন ওই গ্রামের সতীনাথ গুপ্ত।
তাঁর বক্তব্য, “১৪ শতকের যে জমিটা দখল করা হয়েছে, সেটি আমাদের পারিবারিক জমি। আমরা কোন দলের সঙ্গে যুক্ত নই। কেন যে আমাদের জমি দখল করা হল, বুঝতে পারছি না।’’
মনোজ গুপ্ত নামে এক অভিযুক্তের দাবি, “সতীনাথ গুপ্তের জমিটি এক জনকে পাট্টা দেওয়া হয়। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি সেখানে চাষ করছিলেন। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে চাষ বন্ধ করে দেওয়া হয়। অন্য দিকে নিভারানি গুপ্তের স্বামী দিলীপ গুপ্ত এক জনকে জমি বিক্রি করার নামে টাকা নিয়ে রাখলেও তাঁকে জমি বিক্রি করছেন না। গরিব মানুষকে সেই পাইয়ে দিতেই দলের নির্দেশে এটা করা হয়েছে।’’ যদিও জমি বিক্রির কথা অস্বীকার করেছেন দিলীপ গুপ্ত। সতীনাথের দাবি, “পাট্টা থাকলে তা তো পরিবর্তন হয় না। আমাদের নামে ওই জমি এখনো রেকর্ড আছে।’’
রামকৃষ্ণের বক্তব্য, “আমি কেন জমি দখলের ব্যাপারে ইন্ধন দিতে যাবো? আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এ সব করানো হচ্ছে। যদি এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটে তবে তা খতিয়ে দেখে দল ব্যবস্থা নেবে।’’ এলাকার তৃণমূল নেতা পরেশ মুখোপাধ্যায় জানান, জমি থেকে দলের পতাকা তুলে দেওয়া হয়েছে।