পোড়া বাইক। নিজস্ব চিত্র
রাতের অন্ধকারে ফের তিনটি মোটরবাইক পোড়াল দুষ্কৃতীরা। পুড়েছে একটি গাড়ির কিছু অংশও। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের এডিসন রোডে দু’টি আবাসনের ঘটনা। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত চলছে। কিন্তু বছরখানেক ধরে দুর্গাপুর শহরে একের পর এক এমন ঘটনা ঘটেছে। অথচ দুষ্কৃতীরা অধরাই। এই পরিস্থিতিতে শহরবাসীর একাংশ নিরাপত্তা ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এডিসন রোডের একটি আবাসনে থাকেন অরুণকুমার অধিকারী। তিনি জানান, রাত আড়াইটা নাগাদ ঘরের বাইরে অস্বাভাবিক শব্দ শুনতে পান। বেরিয়ে দেখেন, দাউ দাউ করে জ্বলছে গ্যারাজে থাকা দু’টি মোটরবাইক ও একটি সাইকেল। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। দমকলের একটি ইঞ্জিন আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে বাইক দু’টি ও সাইকেলটি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে, জানান অরুণবাবু। ওই রাস্তার ধারেই অন্য একটি আবাসনে থাকেন অ্যাসলি ভার্গিস। তিনিও বলেন, ‘‘ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ ঘুম ভাঙে। মনে হল, বাইরে কিছু জ্বলছে। বেরিয়ে দেখি, মোটরবাইকটা দাউ দাউ করে জ্বলছে। জল ঢেলে নেভানোর চেষ্টা করি। পাড়ার লোকজনও আসেন। বাইকটা পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। সেই আঁচে গাড়ির সামনের অংশটাও পুড়ে গিয়েছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের বিভিন্ন প্রান্তে এমন ঘটনা ঘটছে। ২০১৮-র ২২ ডিসেম্বর কোকআভেন থানার সগড়ভাঙায় একটি বেসরকারি কারখানার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি ভস্মীভূত হয়ে যায়। পরের ঘটনাটি ঘটে ২৯ ডিসেম্বর নিউ টাউনশিপ থানার শরৎপল্লি এলাকায়। এর পরে চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি দুর্গাপুর থানার ডিএসপি টাউনশিপে বি-জোনের মার্কনি অ্যাভিনিউয়ে, নিউটন রোডে, ২৭ ফেব্রুয়ারি কৃত্তিবাস নর্থ রোডে, ১৭ মার্চ আকবর রোডে ও হর্ষবর্ধন রোডে মোটরবাইক বা গাড়িতে আগুন দেয় দুষ্কৃতীরা। গত ২৩ এপ্রিল কোকআভেন থানার শ্রমিকনগর এলাকায় একটি বাড়িতে তিনটি স্কুটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
পরপর এমন ঘটনা ঘটলেও এ যাবৎ দুষ্কৃতীরা অধরা হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরবাসীর একাংশ। কিন্তু কেন এই ঘটনা, তা নিয়ে এখনও কোনও সূত্র সে ভাবে মেলেনি বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। তবে পুলিশ জানায়, এই সব ঘটনার তদন্তে নেমে কখনও প্লাস্টিকের ফাঁকা বোতল, দুষ্কৃতীদের চপ্পল মিলেছে। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, বোতলে করে কেরোসিন বা ওই জাতীয় কোনও তেল ঢেলে আগুন ধরানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনা প্রসঙ্গে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। খুব দ্রুত দুষ্কৃতীরা ধরা পড়বে।’’