কাটোয়ায় বিক্ষোভ কৈথনের বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র
ঘরে ফিরতে চেয়ে থানা ঘেরাও করলেন এক তৃণমূল কর্মী খুনের পর থেকে গ্রামছাড়া কয়েকশো বাসিন্দা। রবিবার দুপুরে কাটোয়া থানায় বিক্ষোভ দেখান কৈথনের ওই বাসিন্দারা। পুলিশ জানায়, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২৩ অগস্ট সন্ধ্যায় কৈথনের নীলেরপাড় এলাকায় আচমকা কয়েকজন দুষ্কৃতী সাহাঙ্গির শেখ (৩৫) নামে এক তৃণমূল কর্মীর উপরে হামলা চালায়। কুড়ুল ও শাবল দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে পাশের জমিতে ফেলে রেখে পালায় তারা। সাহাঙ্গিরকে বাঁচাতে গিয়ে লাঠির ঘায়ে আহত হন তাঁর দুই ভাই জাহাঙ্গীর শেখ ও মণিরুল শেখ। পরে জাহাঙ্গির তৃণমূলেরই কর্মী আজমত শেখ-সহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে ভাইকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পরপরই চার তৃণমূল কর্মীকে কৈথনের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
জুনের শেষ দিকে কাটোয়ার গিধগ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের কাছে বেশ কিছু বোমা উদ্ধার হয়। সেই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল সাহাঙ্গিরের। ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন তিনি। বর্ধমান জেলা আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে গ্রামে ফেরার পরেই খুন হয়ে যান। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, ওই পঞ্চায়েতের প্রধান কে হবে, সে নিয়ে দলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ চলছিল। তার জেরেই অশান্তি পারে বলে অনুমান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খুনের ঘটনার পর থেকেই আজমত-গোষ্ঠীর প্রায় চারশো জন ঘরছাড়া ছিলেন। আত্মীয়-পরিজনের বাড়িতে দিন কাটাচ্ছিলেন তাঁরা। শনিবার বিকেলে কাটোয়া থানায় এসে তাঁরা পুলিশি নিরাপত্তায় গ্রামে ফেরানোর দাবি জানান। সে দিন তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হলেও রবিবার সকাল ৯টা থেকে ফের কাটোয়া থানা ঘেরাও করা হয়। যোগ দেন মহিলা-শিশুরাও। আকবর শেখ, শাকিলা খাতুনদের বক্তব্য, ‘‘তিন মাস ধরে আতঙ্কে আমরা ঘরছাড়া। আমাদের নেতা আজমতের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। এমনকি, একটি সদ্যোজাতের শেষকৃত্যের জন্যও আমরা গ্রামে ঢুকতে পারিনি।’’ এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ বিক্ষোভের সময়ে থানার সামনেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন আম্বিয়া বিবি, সোনা বিবি, রূপা বিবিরা।
পুলিশ জানায়, গ্রামছাড়াদের নাম নথিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো পদক্ষেপ করা হবে।