রাখা আছে আবেদন জমার বাক্স। রয়েছে পুলিশের পাহারাও। মন্তেশ্বরে। নিজস্ব চিত্র
ব্লক অফিসে প্রত্যেক পঞ্চায়েতের জন্য রাখা একটি করে বাক্স। পুরসভা এলাকার জন্য বাক্স কোথাও রাখা মহকুমাশাসকের দফতরে, আবার কোথাও ব্লক দফতরে। জেলার ২১৫টি পঞ্চায়েত এবং ছ’টি পুরসভার জন্য মোট ২২১টি ‘ড্রপ বক্স’ রাখা থাকল ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’-এ ক্ষতিপূরণের জন্য নতুন করে আবেদনপত্র জমা দিতে। পুলিশি পাহারায় সেই আবেদন জমা দেওয়ার ব্যবস্থাও ছিল পূর্ব বর্ধমানের ব্লক ও মহকুমা প্রশাসনের অফিসগুলিতে। কিন্তু বৃহস্পতিবার দিনের শেষে জেলা জুড়ে মাত্র ২৫৯টি আবেদন জমা পড়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
আজ, শুক্রবার বিকেল ৪টে পর্যন্ত ওই আবেদন জমা দেওয়া যাবে। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘শুক্রবার ‘ড্রপ বক্স’ খোলা হবে। সেই সময়ে ডব্লিউবিসিএস পদমর্যাদার আধিকারিকেরা উপস্থিত থাকবেন। তাঁদের তত্ত্বাবধানে আবেদনগুলি যাচাই করা হবে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ অগস্টের মধ্যে আবেদন খতিয়ে দেখা শেষ করতে হবে ‘বিশেষ দল’কে। ১৪ অগস্ট প্রতিটি পঞ্চায়েত ও পুরসভায় তালিকা টাঙানো হবে।
তবে নতুন করে ক্ষতিপূরণের আবেদনের সত্যতা যাচাই করা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসনের একাংশের দাবি, আড়াই মাস আগে ওই ঝড় হয়েছিল। এত দিন ধরে বাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করেননি, এমন বাসিন্দা খুঁজে পাওয়া কঠিন হতে পারে। এ ছাড়া, ওই ঝড়ের পরেও কয়েকটি জায়গায় ভাল বৃষ্টি-ঝড় হয়েছে। তাতে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কী করণীয়, সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা নেই।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০ মে-র ওই ঘূর্ণিঝড়ের পরে, এই জেলায় ১৩,৬৯৬টি ক্ষতিপূরণের আবেদন জমা পড়েছিল। তার মধ্যে ১৩,৬৩৪টি আবেদন খতিয়ে দেখা হয়। জানা যায়, ১,৩৩২টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তেরা বাড়ি পিছু ২০ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। ৬,২২৫টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য প্রত্যেক বাসিন্দা পাঁচ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। জেলায় ক্ষতিপূরণ বাবদ মোট ৫ কোটি ৭৭ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্তের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে গিয়েছে। কাটোয়া-সহ দু’-একটি জায়গায় কিছু ‘ভুয়ো’ ক্ষতিগ্রস্ত টাকা ফেরত দেন। প্রশাসনের কর্তারা জানান, এ বার যাতে কোনও ‘ভুয়ো’ ক্ষতিগ্রস্ত টাকা না পান, সে জন্য জেলার গ্রামীণ এলাকা এবং মেমারি, গুসকরা ও দাঁইহাট পুরসভায় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার আধিকারিকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্ধমান, কাটোয়া ও কালনা শহরের দায়িত্বে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট মহকুমাশাসকেরা।