চিন্তায় পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র।
ভাল রোজগারের আশায় পাড়ি দিয়েছিলেন বিদেশে। কিন্তু কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও দেশে ফিরতে পাচ্ছেন না কুলটির ডিসেরগড়ের বাসিন্দা সঞ্জয় রায়। যে দালাল সংস্থার মাধ্যমে সৌদি আরবে কাজে গিয়েছিলেন, দু’লক্ষ টাকা দাবি করে পাসপোর্ট আটকে রেখেছে তারা। তাই, বিদেশ-বিভুঁইয়ে চেয়েচিন্তে দিন কাটছে তাঁর। বিপাকে পড়েছে ডিসেরগড়ে তাঁর পরিবারও। সমস্যা মেটাতে প্রশাসনের নানা স্তরে চিঠি পাঠিয়েছে তারা।
ডিসেরগড়ের ঝালবাগান লাগোয়া বস্তিতে থাকে পরিবারটি। সঞ্জয়বাবুর স্ত্রী চিন্তাদেবী জানান, কুলটি, বরাকরে গাড়ি চালাতেন স্বামী। কোনও রকমে সংসার চলত। বছর সাতেক আগে এক দিন বাড়ি ফিরে স্বামী জানান, সৌদি আরবে মোটা টাকার চাকরি করতে যাবেন। সংসারে স্বচ্ছলতা আসবে। চিন্তাদেবী বলেন, ‘‘পরিণতি এমন হবে, তখন কল্পনাও করিনি।!’’
বুধবার ফোনে সঞ্জয়বাবু জানান, তিনি এখন রয়েছেন সৌদির রিয়াধে। যে সংস্থায় গাড়ি চালাতে গিয়েছিলেন সেখানে কাজ শেষ হয়ে যায় বছর দেড়েক আগে। কিন্তু যাদের মাধ্যমে কাজটি পেয়েছিলেন তারা দু’লক্ষ টাকা দাবি করে পাসপোর্টটি আটকে রেখেছে বলে তাঁর অভিযোগ। বছর পঁয়তাল্লিশের সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘এখানে প্রায় ভিখারির মতো দিন কাটাচ্ছি। পাঁচ মাস ধরে ভারতীয় দূতাবাসে সাহায্যের জন্য যাতায়াত করছি। এখানকার শ্রম আদালতেও আবেদন করেছি। কিন্তু লাভ হচ্ছে না।’’
চিন্তাদেবী জানান, তাঁরা অর্থকষ্টে ভুগছেন। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বড় মেয়ে পিঙ্কি বলে, ‘‘বাবা যখন বিদেশ গেল, ভেবেছিলাম আমাদের দিন ফিরবে। কিন্তু এখন বাবাকে আর দেখতে পাব কি না, সেটাই চিন্তা!’’ চিন্তাদেবী জানান, স্বামীকে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে তাঁরা রাষ্ট্রপতির দফতর, বিদেশ মন্ত্রক ও মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের ভরসা জোগাচ্ছেন পড়শিরা। স্থানীয় বাসিন্দা বনোয়ারি লালা জানান, তাঁরা যথাসাধ্য পরিবারটির পাশে থাকার চেষ্টা করছেন।
বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। ওই পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ পাইনি। পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’