সামজিক মাধ্যমে বর্ধমান শহরের নানা ছবি নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে এমনই ‘মিম’।
পারদ-পতন অব্যাহত। শীতে কার্যত জবুথবু বর্ধমান। মঙ্গলবার তাপমাত্রা ১০ ছুঁয়েছিল। বৃহস্পতিবার নেমেছে নয়ের নীচে। সঙ্গে দোসর কনেকনে ঠান্ডা উত্তুরে হাওয়া।
মঙ্গলবার সকাল থেকে কুয়াশার চাদরে মোড়া ছিল বর্ধমান শহর। রোদের দেখা মেলেনি বললেই চলে। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হলেও কুয়াশার দাপট কমেনি। সঙ্গে ছিল হাড়কাঁপানো উত্তুরে হাওয়া। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক ধাক্কায় দশে নেমেছিল সে দিন। বুধবার সকালে রোদের দেখা মিললেও ঠাণ্ডায় কেঁপেছে জেলা। উত্তুরে হাওয়ার দাপটও ছিল তেমনই। এ দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা আরও নেমে হয়েছে ৮.৬।
শীতের প্রভাব জনজীবনে কতটা পড়েছে, সমাজমাধ্যমে মিম ও পোস্ট দেখে তার কিছুটা আন্দাজ মিলছে। কোনও ‘মিম’-এ দেখা যাচ্ছে, কার্জন গেট চত্বর বরফের চাদরে মোড়া। হেঁটে বেড়াচ্ছে পেঙ্গুইন। কোনও ‘মিম’-এ দেখানো হয়েছে, বর্ধমান রেল স্টেশন থেকে দেখা যাচ্ছে বরফের চাদরে মোড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা। সে সব ‘মিম’ শেয়ার করে লেখা হচ্ছে মজার নানা মন্তব্য। এক জন লিখেছেন, ‘তাই তো ভাবছি, এত ঠান্ডা বর্ধমানে পড়ল কী করে? কাঞ্চনজঙ্ঘা যে এ দিকে এগিয়ে এসেছে, তা তো খেয়াল করিনি। কাল চোখে পড়ল।’’ কার্জন গেটে তুষারপাতের ছবিতে এক জনের মন্তব্য, ‘‘হঠাৎ করেই কখন যেন তুষারপাত হয়ে গেল বর্ধমান শহরে।’’
শীতের আমেজ উপভোগ করছেন শহরবাসী। তাঁদের মধ্যে মৌসুমি চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যাপক ঠান্ডা পড়েছে। শহরে মেলা বসেছে। চুটিয়ে মজা করছি।’’ অনির্বাণ হাজরা নামে আর এক জন বলেন, ‘‘সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত চায়ের দোকানে আড্ডা জমছে। হাতে গরম চায়ের ভাঁড় আসতে অনেক সময় লাগছে।’’ ফি বছর গরমেও নাকাল হয় বর্ধমান জেলা। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি-ও পেরিয়ে যায় কখনও। তা নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে যায় মিমে।
গত তিন দিনের ধারাবাহিক পারদ-পতনে অবশ্য অস্বাভাবিক কিছু দেখছে না জেলা কৃষি দফতর। তাদের বক্তব্য, প্রত্যেক বছরই শীতের কয়েকটি দিন এ ভাবেই দ্রুত তাপমাত্রা নামে। কিছুদিন তা স্থায়ী হয়। গত কয়েক বছর ধরেই এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। জেলা সহ-কৃষি অধিকর্তা আশিস বারুই বলেন, ‘‘স্বাভাবিক ঠান্ডা পড়েছে। কুয়াশা থাকছে। এই ঠান্ডা আলুচাষের পক্ষে ভাল। তবে ধসা রোগ নিয়ে চাষিদের সতর্ককরা হচ্ছে।’’