Tantuja

শাড়ি কিনবে ‘তন্তুজ’, খুলল দু’টি তাঁত-হাট

কৃষিকাজের পরে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় বেশি মানুষ যুক্ত তাঁতশিল্পের সঙ্গে। কিন্তু গত সাড়ে তিন বছরে কখনও নোট-বন্দি, আবার কখনও জিএসটি চালুর জেরে এই শিল্প ধাক্কা খেয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২০ ০৫:৫৬
Share:

পূর্বস্থলীতে চালু হল তাঁতের হাট। নিজস্ব চিত্র

‘লকডাউন’-এর জেরে মাস দু’য়েক ধরে তাঁতশিল্পের কাজ বন্ধ। কাপড় বোনা হয়ে পড়ে থাকলেও, কেনার লোক মিলছে না বলে অভিযোগ তাঁতিদের। অনেক কম দামে শাড়ি বিক্রি করতে হচ্ছে, দাবি কালনা-কাটোয়ার অনেক তাঁতশিল্পীর। এই পরিস্থিতিতে অন্য বছরের তুলনায় মাস তিনেক আগে থেকেই ‘তন্তুজ’-এর তরফে পুজোর কাপড় কেনা শুরু করার পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানালেন রাজ্যের বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী তথা ‘তন্তুজ’-এর চেয়ারম্যান স্বপন দেবনাথ।

Advertisement

বুধবার স্বপনবাবু বলেন, ‘‘লকডাউনের জেরে তাঁতিদের দুর্দশার কথা ভেবে শনিবার থেকে সরাসরি তাঁদের কাছে পুজোর কাপড় কেনা শুরু করবে তন্তুজ। সংস্থার আধিকারিকদের উপস্থিতিতে উপযুক্ত গুণমানের কাপড় কেনা শুরু করা হবে ধাত্রীগ্রাম এলাকা থেকে। ধীরে-ধীরে তা করা হবে শান্তিপুর, ফুলিয়া, নবদ্বীপ-সহ নানা তাঁত-এলাকায়।’’ এ ছাড়া, তাঁতিদের শাড়ি বিক্রির সুবিধার জন্য এ দিন থেকে ধাত্রীগ্রাম এবং শ্রীরামপুরের সরকারি তাঁতের হাট খুলে দেওয়া হয়।

কৃষিকাজের পরে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় বেশি মানুষ যুক্ত তাঁতশিল্পের সঙ্গে। কিন্তু গত সাড়ে তিন বছরে কখনও নোট-বন্দি, আবার কখনও জিএসটি চালুর জেরে এই শিল্প ধাক্কা খেয়েছে বলে অভিযোগ। এ বার ‘লকডাউন’ শুরু হওয়ার পর থেকে বন্ধ কাপড় বোনার কাজ। হাজার-হাজার তাঁত-শ্রমিক অর্থকষ্টে ভুগছিলেন বলে অভিযোগ আসছিল। এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রী স্বপনবাবু, কালনার মহকুমাশাসক সুমনসৌরভ মোহান্তির উপস্থিতিতে এ দিন থেকে খুলে দেওয়া হয় পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুর ও কালনার ধাত্রীগ্রামের তাঁতের হাট।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে ধাত্রীগ্রামের হাটে ১৪০ জন ও শ্রীরামপুরে ১০০ জন ব্যবসায়ীকে বসানো হয়েছে। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘হস্তশিল্প দফতর থেকে খবর নিয়ে জেনেছি, প্রথম দিনে ধাত্রীগ্রামে বিক্রি হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকার শাড়ি। শ্রীরামপুরেও ভাল বিক্রি হয়েছে। এখন থেকে নিয়ম করে সপ্তাহে বুধ ও শনিবার দু’টি হাটে ব্যবসায়ীরা বসবেন। তবে লকডাউনের জন্য যাঁরা মেঝেতে বসে কাপড় বেচেন তাঁদের দৈনিক যে ১০ টাকা দিতে হত, তা দিতে হবে না।’’

এ সব পদক্ষেপ সত্ত্বেও সাধারণ তাঁতিদের অনেকেই এখনই বেশি আশাবাদী হতে নারাজ। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের তাঁতশিল্পী হুমায়ুন শেখের কথায়, ‘‘আমরা মতো অজস্র মানুষ রয়েছেন যাঁরা তাঁত বোনা ছাড়া, কোনও কাজ জানেন না। তাঁরা চরম কষ্টে রয়েছেন। শুধু সরকারি হাট খুললেই হবে না। তাঁতের শাড়ি বেচা-কেনা স্বাভাবিক হবে বড়বাজার-সহ বিভিন্ন এলাকা সচল হলে।’’ তাঁতিদের একাংশের দাবি, আর্থিক সঙ্কটের জন্য ৮৫০-৯০০ টাকার শাড়ি ৪৫০ টাকায়, ৪৮০ টাকার শাড়ি ২১০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁদের অনেকে। মন্ত্রী অবশ্য জানান, ধীরে-ধীরে তাঁতশিল্পের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা শুরু হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement