গুজবের জেরে গণপিটুনিতে দুই যুবকের মৃত্যুর রেশ কাটার আগেই ফের ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির অভিযোগ উঠল কাটোয়ায়।
সোমবার কাটোয়ার বরমপুর গ্রামে পলাশ পাল নামে বছর পঁয়ত্রিশের এক যুবককে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবক আপাতত কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর বাড়ি একাইহাটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে পলাশ-সহ চার জনের একটি দলকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নাম, ধাম জিজ্ঞেস করায় তিন জন পালিয়ে যায়। পলাশ কিছুটা দৌড়ে গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের পিছনে লুকিয়ে পড়েন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকে খুঁজে বের করে গ্রামবাসীদের একাংশ বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। পরে গ্রামেরই জগন্নাথ সাহা নামে একজন ওই যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে বরমপুর লাগোয়া বাজার গ্রামে দুই কিশোর নিখোঁজ হয়। এ দিন ওই চার যুবককে সন্দেহজনক ভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ অনুমান করেন, ওই কিশোরদের নিখোঁজের ঘটনায় এরা জড়িত। এরপরেই চলে মারধর।
কয়েকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া গুজবের জেরে কালনা, মন্তেশ্বরে একাধিক গণপিটুনির ঘটনার পরে পাল্টা প্রচারে নামে পুলিশ-প্রশাসন। সভা করে, গ্রামে মাইক বাজিয়ে প্রচার করা হয়। স্কুলপড়ুয়া, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাও নামেন প্রচারে। বারবার গুজবে কান না দেওয়া, আইন হাতে তুলে না নিয়ে সন্দেহজনক ঘটনা দেখলে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর কথা বলা হয়। তারপরেও যে হুঁশ ফেরেনি এ দিনের ঘটনা তার প্রমাণ। কাটোয়া থানার ওসি সঞ্জীব ঘোষের দাবি, গুজব-বিরোধী প্রচার করার পরেও অনেকেই সচেতন হননি। আবারও প্রচার চালানো হবে বলেও দাবি করেন তিনি। ওই যুবক কেন ঘোরাফেরা করছিল তা দেখা হবে বলে তাঁর দাবি।