Madhyamik Exam 2024

সময়ে কেন্দ্রে পৌঁছনো যাবে তো, দুশ্চিন্তা

কাঁকসার আমলাজোড়া হাইস্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্র গোপালপুর হাইস্কুল। দূরত্ব আট কিলোমিটারেরও বেশি। আমলাজোড়ার পড়ুয়াদের বাড়ি আরও দূরে।

Advertisement

অর্পিতা মজুমদার

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৫৭
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আগামী কাল শুরু হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। গত বার পর্যন্ত পরীক্ষা সকাল ১২টায় শুরু হলেও এ বার তা হবে সকাল ১০টায়। শিক্ষকদের সকাল ৮টার মধ্যে, পরীক্ষার্থীদের সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে হবে। প্রধান পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে প্রশ্নপত্র আনতে থানায় যেতে হবে সকাল ৬টার মধ্যে। ফলে, নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনো যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের একাংশ। সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষকদেরও একাংশ। নানা এলাকায় উপযুক্ত গণ-পরিবহণ না থাকায় সমস্যা আরও বেড়েছে।

Advertisement

পশ্চিম বর্ধমানে এই বারে প্রবল শীত পড়েছে। সকালের দিকে আকাশ সাধারণত কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে। তার মধ্যেই এমন অনেক পরীক্ষার্থী রয়েছে, যাদের ১০-১২ কিলোমিটার দূরের পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে হবে। এমনও অবস্থা হয়েছে যে, অনেক পড়ুয়াকে বাড়ি থেকে সকাল সাড়ে ৬টা বা ৭টায় বেরোতে হবে।

যেমন, কাঁকসার আমলাজোড়া হাইস্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্র গোপালপুর হাইস্কুল। দূরত্ব আট কিলোমিটারেরও বেশি। আমলাজোড়ার পড়ুয়াদের বাড়ি আরও দূরে। এই রাস্তায় বাস যোগাযোগ নেই। অটো, টোটোও সরাসরি চলে না। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের গৌরবাজার রামপদ হাইস্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্র হয়েছে মাদারবনি কোলিয়ারি হাইস্কুল। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের ৭-১১ কিলোমিটার পথ উজিয়ে যেতে হবে। এখানেও সরাসরি যাতায়াতের কোনও ব্যবস্থা নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েক জন অভিভাবক বলেন, “গাড়ি ভাড়া করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে হবে। কিন্তু সবার সেই আর্থিক ক্ষমতা নেই। খুবই সমস্যা হবে।”

Advertisement

এ ছাড়া, বহু ছাত্রছাত্রী দুপুরের খাবারের জন্য ‘মিড-ডে’ মিলের উপরে নির্ভর করে। এই সব প্রত্যন্ত এলাকার ছাত্রছাত্রীদের ভোরে জলখাবার খেয়ে বেরোতে হবে। পরীক্ষা শেষের পরে
দুপুর ৩টে-সাড়ে ৩টেয় বাড়ি পৌঁছে তার পরে খাবার খেতে পারবে তারা। পাশাপাশি, প্রধান পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আনতে শিক্ষকদের থানায় ‘রিপোর্ট’ করতে হবে সকাল ৬টার মধ্যে। প্রশ্নপত্র নিয়ে প্রধান পরীক্ষাকেন্দ্রের আওতায় থাকা পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে প্রশ্নপত্র পৌঁছতে হবে ৮টার মধ্যে।

এই পরিস্থিতিতে সরব হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। প্রধান শিক্ষকদের একটি সংগঠন ‘রণতূর্য’-এর রাজ্য সভাপতি জইনুল হক বলেন, “পরীক্ষার্থীদের এমন নানা সমস্যার কথা ভেবে সময়সূচি তৈরি করা উচিত ছিল। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। প্রত্যন্ত এলাকার পরীক্ষার্থীদের অসুবিধায় পড়তে হবে।” এই সব সমস্যা দূর করতে পরীক্ষার সময়সূচি এক ঘণ্টা পিছনোর দাবি জানিয়েছিল বাম প্রভাবিত ‘নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি’।
সংগঠনের জেলা সম্পাদক অমিতদ্যুতি ঘোষ বলেন, “প্রত্যন্ত এলাকার পরীক্ষার্থীদের অত সকালে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে, যাতায়াতে বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু এই দিকটির কথা কিছু ভাবাই হল না।”

যদিও, মাধ্যমিক পরীক্ষার পর্ষদের তরফে আহ্বায়ক তথা ‘তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র জেলা সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায় জানান, পরিবহণ দফতরের মাধ্যমে সমস্ত বাস, অটো, টোটো
সংগঠনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। পরীক্ষার দিনগুলিতে সকাল থেকে সেগুলি চলবে। তা ছাড়া সমাজমাধ্যমে ‘কন্ট্রোল রুম’-এর নম্বর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে কোনও পরীক্ষার্থী সমস্যায় পড়লে জানাতে পারে। সঙ্গে-সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে ক্ষেত্রে। দুর্গাপুরের বিজড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজি নিজামুদ্দিন জানিয়েছেন, পরীক্ষার সময় এগিয়ে এসেছে বলে এ বার স্কুলের তরফে অভিভাবকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের শিক্ষকেরা মোটরবাইক নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে উপস্থিত থাকবেন। কোনও পরীক্ষার্থীর সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement